খুটাখালীতে বিদ্যুতের আলো বঞ্চিত ৬ গ্রামের ৫ হাজার মানুষ

এম.রায়হান চৌধুরী: দীর্ঘ এক দশক ধরে বিদ্যুতের আলো থেকে বঞ্চিত চকরিয়া উপজেলা খুটাখালীর ৬ গ্রামের ৫ হাজার মানুষ। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে এসব এলাকার হাজার হাজার মানুষের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের প্রধান অন্তরায় বিদ্যুৎ সমস্যা। স্থানীয় ও জাতীয় সব নির্বাচন এলে প্রার্থীরা
বিদ্যুৎ সংযোগের কথা দিলেও নির্বাচিত হয়ে প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়নের কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। সম্প্রতি অবহেলিত এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিদ্যুৎ না থাকায় প্রচন্ড গরমের দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে জন জীবন। অন্ধকারাচ্ছন পরিবেশে ল্যাম্প-কুপি বাতি জালিয়ে লেখা-পড়া করছে শিক্ষার্থীরা। হিমশিম খাচ্ছেন এখানকার মানুষ। মোবাইল-টর্চ লাইট চার্জ দেয়ার জন্য খুটাখালী বাজারে আসতে হয়। ৬নং ওয়ার্ডের সেগুন বাগিচা, ভিলিজার পাড়া, জঙ্গল খুটাখালী, দরগাহ পাড়া, হরিখোলা, পিয়াজ্যাকাটার বেশীর ভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় ছোট-বড় কারখানা, গবাদি পশুর খামার, পোল্ট্রি ফার্ম ও মৎস্য চাষের উজ্জল সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও তা স্থাপন করা যাচ্ছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুটাখালীতে বিগত এক দশক পূর্বে পল্লী বিদ্যুতায়ন কার্যক্রম চালু হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি চকরিয়া জোনাল অফিসের আওতায় কার্যক্রম শুরু হয়। উক্ত সমিতির আওতাধীন খুটাখালী ইউনিয়নের ৯ ওয়ার্ডের প্রায় অর্ধ শতাধিক গ্রাম রয়েছে। এর মধ্যে এ পর্যন্ত ৪০ টির অধিক গ্রাম বিদ্যূতায়িত হয়েছে এবং অবশিষ্ট গ্রাম গুলো এখনো বিদ্যুতায়নের আওতায় আনা হয় নি। 
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, খুটাখালীতে প্রায় ৩ হাজার পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। তৎমধ্যে ২ শতাধিক গ্রাহক এখনো মিটার সংযোগ পান নি। সংশ্লিষ্ট এলাকা সরেজমিন ঘুরে ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায়, ৬ গ্রামের ৪টি মসজিদ, ২টি নূরানী মাদ্রাসা ও ১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিভিন্ন এনজিও পরিচালিত স্কুল রয়েছে ১০টির অধিক। দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় বিদ্যুৎ না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের লেখা-পড়া ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী আখতার কামাল জানান, গত কয়েক বছর পূর্বে পল্লী বিদ্যুৎ চকরিয়া জোনাল অফিস সেগুন বাগিচায় তার-খুঁটি স্থাপন করলেও এখনো সংযোগ দেন নি। ব্যবসায়ী শামশুল আলম জানান, জনবহুল এ ৬ গ্রাম দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। যার কারণে দূর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে এখানকার ৫ হাজার লোক। কলেজ ছাত্র আরমান শাহজাহান জানান, সরকার দেশকে ডিজিটাল করলেও তার কোন ছোঁয়া লাগেনি সেগুন বাগিচা গ্রামে। স্কুল ছাত্রী রেহেনা, লাকি, আয়েশা জানান, বিদ্যুৎ না থাকায় রাতে দীর্ঘক্ষণ পর্যন্ত লেখা-পড়া করতে মন চায় না। তাছাড়া ল্যাম্প-বাতি জালিয়ে বেশিক্ষণ পড়লে চোখে ঝাপসা দেখা দেয়। সংশ্লিষ্ট এলাকা তথা ৬নং ওয়ার্ড মেম্বার আনোয়ার হোসেন জানান, তার ওয়ার্ডের ৬ গ্রাম এখনো বিদ্যুতায়িত হয়নি। জঙ্গল খুটাখালী, দরগাহপাড়া, হরিখোলা, সেগুন বাগিচা, ভিলিজার পাড়া, পিয়াজ্যাকাটার ৫ হাজার লোক বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত রয়েছে। তিনি আরো জানান, পিয়াজ্যাকাটা-লম্বাতলী-সেগুন বাগিচা-ভিলিজার পাড়ায় লাইন ও খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। তবে মিটার না পাওয়ায় সংযোগ দেয় নি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ।