কক্সবাজার জেলাব্যাপী অবৈধ স’মিল : উজাড় হচ্ছে বন

নিজস্ব প্রতিবেদক: জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে উঠছে অবৈধ স’মিল বা করাত কল। সরকারের কোন ধরনের অনুমতি ছাড়া দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের চোখ ফাঁকি দিয়ে অথবা তাদের ম্যানেজ করে গড়ে উঠা এসব অবৈধ সমিল গ্রামাঞ্চলে গড়ে উঠার ফলে একদিকে উজাড় হচ্ছে বন,
অন্যদিকে স্থানীয়ভাবে গড়ে উঠছে বনখোকোদের সিন্ডিকেট। তাই বৃহত্তর স্বার্থে দ্রুত এসব অবৈধ সমিল উচ্ছেদের দাবি জানান এলাকাবাসী। এদিকে কর্তৃপক্ষ বলছে কেউ অনুমোদন ছাড়া স’মিল করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কক্সবাজার শহরের পার্শ্ববর্তি ইউনিয়ন পিএমখালী এলাকার আলতাজ, হাবিব উল্লাহ, মনির আহামদসহ অনেকে বলেন শুধু পিএমখালী ইউনিয়নে সম্প্রতি ৩/৪টি নতুন সমিল বা করাত কল গড়ে উঠেছে। আমাদের জানা মতে তারা কেউ সরকারি অনুমোদন নেয়নি। অনেকে আবেদন করেই স’মিল বসিয়ে দিয়েছে। এতে করে ইউনিয়নের প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর বনভূমিতে থাকা গাছ ধ্বংস হচ্ছে। এর মধ্যে পিএমখালীর নছরত আলী পাড়ার তাহেরুল ইসলাম সম্প্রতি একটি স’মিল এলাকায় বসিয়েছে। আর নুর মোহাম্মদ চৌধুরীর বাজারে একটি, ধাওনখালী মোহছনিয়া পাড়া, হাঙ্গর হাট পাড়া এলাকায় ছুরত আলম, বাংলাবাজার ও নোয়াপাড়া এলাকায় মাস্টার ওবাইদুর রহমান ও শাহ আলম এরা সবাই নতুন স’মিল করেছে। এতে করে কিছু সন্ত্রাসী লোক রাতে গাছ এনে রাতেই তা চিড়াই করে বনের গাছ ধ্বংস করছে। আর এসব স’মিল গ্রামাঞ্চলে ও বনের পথে হওয়ায় অনেকে পাহাড় থেকে গাছ কেটে এনে সরাসরি এসব অবৈধ সমিলে এনে গাছ চিড়াই করে তা আবার গাড়িতে করে নিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ বনখেকোদের জন্য সুবিধা হওয়ায় বনভূমি উজাড় হচ্ছে। আরো দেখার বিষয় হচ্ছে অনেক স’মিল মালিকরা নিজেই লোক দিয়ে পাহাড় থেকে বনভূমির গাছ এনে নিজেদের স’মিলে চিড়াই করে তা বিক্রি করছে। এরা অনেকে এলাকার ও সরকার দলীয় প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকার কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পাচ্ছে না। এছাড়া বন বিভাগের লোকজন এসেই নিয়মিত টাকা নিয়ে যায় বলেও জানান তারা। 
এদিকে খুরুশকুল, ভারুয়াখালী, ইসলামপুর, চৌফলদন্ডী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি নতুন সমিল গড়ে উঠেছে বলে জানান এলাকাবাসী। রামু উপজেলার গর্জনিয়া, খুনিয়াপালং, কচ্ছপিয়া, চাকমারকুল ইউনিয়নে গত ১ বছরে বেশ কয়েকটি নতুন সমিল গড়ে উঠেছে। আর এসব স’মিলে দিনরাত অবৈধ গাছ চিড়াই কাজ চলছে। যার ফলে এলাকার বনভূমি উজাড় হয়ে যাচ্ছে। 
আলাপকালে পিএমখালী ইউনিয়নের একজন প্রতিনিধি বলেন এলাকায় ইতোমধ্যে যারা স’মিল করেছে তার জন্য বনভূমি ধ্বংস হচ্ছে এটা সত্য কথা। কর্তৃপক্ষের উচিত দ্রুত এসব অবৈধ স’মিলের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া। এ ব্যাপারে আলাপকালে কক্সবাজার বন বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (উত্তর) শাহ ই আলম বলেন, গ্রামাঞ্চলে অনুমতি ছাড়া স‘মিল করার কোন বিধান নেই। খোঁজ নিয়ে অবৈধ স’মিলের ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ছৈয়দ নুরুল বাসির বলেন, আমার জানা মতে ইদানিং কোন করাত কলের অনুমতি দেওয়া হয়নি। কেউ যদি সরকারের অনুমতি ছাড়া স’মিল করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।