ডেস্ক রিপোর্ট: ভোর রাতে কক্সবাজারের পাঠক প্রিয় দৈনিক কক্সবাজারবাণী অফিসে তালা ভেঙ্গে চুরি করতে আসা শহরের এক চিহ্নিত চোর ধরা পড়েছে। বুধবার ভোর রাতে কক্সবাজার মডেল থানার পেছন রোডস্থ হোটেল তাজশেবার নৈশপ্রহরী স্বপন ও কর্মচারী ওবাইদুল হক তাকে আটক করে জনতার কাছে সোপর্দ করে। এক পর্যায়ে চোর আটকের সংবাদ পেয়ে আশপাশ থেকে ছুঁটে আসা লোকজন তাকে গণধোলাই দেয়। এরপর পত্রিকাটির সম্পাদক ফরিদুল মোস্তফা খান জনতার গণধোলাই থেকে তাকে মুক্ত করে আইন হাতে তুলে না নিয়ে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করে।
জানা গেছে, আটক চোরের নাম ফরিদ আলম। সে শহরের বৈদ্যঘোনা এলাকার জনৈক জপু বহদ্দারের বখে যাওয়া ছেলে। জনতার কাছে ধরা পরার পর ফরিদ্যা চোরা অকপটে স্বীকার করে তাদের গ্রামে বাড়ি দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীতে। দীর্ঘদিন ধরে সে কক্সবাজার শহরের অবস্থান করে একটি শক্তিশালী চোর সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন স্থানে চুরিচামারিতে লিপ্ত। কক্সবাজার আদালত পাড়ার জনৈক করিম উল্লাহ, আবুল কালাম ও বেগুনীর ছেলে তাকে পাঠিয়েছিল দৈনিক কক্সবাজারবাণীর তালা ভেঙ্গে কম্পিউটার ও মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যেতে। এক পর্যায়ে ফরিদ্যা চোরা মডেল থানা হাজতে হাঁউমাউ করে কান্নাকাটি করে নিজের কৃত সকল দোষ স্বীকার করে অনুশোচনা করে বলেন, জীবনে অনেক চুরিচামারি করেছি, এ রকম বিপদে পড়িনি। এবার যদি আমাকে ক্ষমা করা হয় আমি আজীবনের জন্য ভালো হয়ে যাবো।
এদিকে, ফরিদ্যা চোরা ভবিষ্যতে নিজে ভালো যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা শহর ও আশপাশের এলাকায় এমন কোন চুরি-ছিনতাই নাই যেখানে সে জড়িত নয়। শুধু তাই নয়, সেও তার বাহিনীর আদালত পাড়ার করিম উল্লাহ, আবুল কালাম ও বেগুনির ছেলে সাম্প্রতিক সময় কক্সবাজার জেলা পরিষদের তালা ভেঙ্গে সেখানকার সরকারী মূল্যবান কাগজপত্র ও দামি জিনিসপত্র যা পেয়েছে তা নিয়ে যায়। এছাড়া তারা রাতের অন্ধকারে হিলটপ সার্কিট হাউজ, কলাতলী গোলচক্কর, হলিডে মোড়, হাসপাতাল, বৌদ্ধ মন্দির রোড, টেকপাড়া, স্টেডিয়াম পাড়া, লারপাড়া, বাস টার্মিনাল, হাঙ্গরপাড়া, নুরপাড়া, মাছবাজার এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত চুরি-ছিনতাই কাজে জড়িত দীর্ঘদিন ধরে। ফলে এদের কারনে কক্সবাজারে বেড়াতে ইতিপূর্বে দেশী-বিদেশী অনেক পর্যটক সর্বস্ব হারিয়ে চোখের কান্না বুকে চেপে গন্তব্যে ফিরেছেন।
হোটেল তাজশেবায় অবস্থিত দৈনিক কক্সবাজারবাণীর তালা ভেঙ্গে চুরি করে ব্যর্থ হয়ে ফরিদ্যা চোরা ছাঁদের উপর থেকে লাফ দিয়ে পালাতে যাওয়ার সময় হোটেলের কর্মচারী ওবাইদুল হক তাকে আটক করে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন, পালানোর সময় ফরিদ্যার চোরার হাতে তালা ভাঙ্গার বেশকিছু সরঞ্জাম ও ধারালো ছুরি ছিল। এ সময় তার সহযোগি হিসেবে আরো ২/১ জন চোর নিচের দিকে দেখা গেলেও ফরিদ্যা চোরা আটকের দৃশ্যটি দেখে তারা দিকবেদিক পালিয়ে যায়।
কক্সবাজার মডেল থানার ওসি জসিম উদ্দিন জানিয়েছেন, পত্রিকা অফিসে চুরি করতে গিয়ে জনতার গণধোলায়ের পর আটক ফরিদ্যা চোরাকে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে প্রচলিত আইনে তাকে আইনের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন