কক্সবাজার পুলিশ চড়ে পরের গাড়িতে

স্টাফ রিপোর্টার: প্রয়োজনীয় যানবাহন না থাকায় কক্সবাজারের সন্ত্রাস কবলিত ৩ থানা পুলিশ রয়েছেন বেকায়দায়। পরের গাড়ি ধার কিংবা কেড়ে নিয়ে চলতে হচ্ছে তাদের। ফলে গুরুত্বপূর্ণ কোন অভিযান চালানোর প্রয়োজন হলেও সময়মত তারা তা সারতে পারেন না। অনেক সময় বিভিন্ন পরিবহন মালিক সমিতির কাছ থেকে গাড়ি ধার পেলেও পুলিশি অভিযানের তথ্য ফাঁস হচ্ছে হরদম। 

সন্ত্রাস কবলিত কয়েকটি উপজেলা ছাড়াও প্রায় সব উপজেলায় প্রয়োজনীয় যানবাহন না থাকায় চরম ভাবে ব্যহত হচ্ছে পুলিশি কার্যক্রম। এতে মহাসংকট দেখা দিয়েছে জেলার বৃহত্তম উপজেলা চকরিয়া, মহেশখালী ও রামু থানায়। এই তিনটি উপজেলার চকরিয়ায় রয়েছে ২টি, মহেশখালীতে রয়েছে ১টি ও রামুতে রয়েছে মাত্র একটি গাড়ি। এ ছাড়াও কক্সবাজার সদর থানা ব্যতিত অন্যান্য উপজেলায় পুলিশের ব্যবহারের জন্য সরকারি গাড়ি রয়েছে ১টি করে।
মহেশখালী কুতুবজুমের খাইরুল বশর জানিয়েছেন ঘটিভাঙ্গায় কোন সমস্যা হলে পুলিশ আসতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘন্টা। যার ফলে পুলিশ আসলেও তারা কার্যকর কোন ভূমিকা রাখতে পারে না। গাড়ি ছাড়াও নেই কোন ¯পীডবোট। সমুদ্রে কোন সমস্যা হলে এতে পুলিশ যাওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। যার ফলে সোনাদিয়া, ঘটিভাঙ্গা ও ধলঘাট ইউনিয়নে জলদস্যুরা আস্তানা গড়ে তুলেছে। হোয়ানক বানিয়া কাটার মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, এই এলাকা থেকে মহেশখালী থানা যতদুর কালারমারছড়াও ততদুর। যার ফলে অপরাধীরা অপরাধ করে সহসায় সরে পড়তে পারে। ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ দুইটি সড়কে একটি গাড়ি নিয়ে পুলিশকে টহল দিতে হচ্ছে। কালারমারছড়া ও মাতারবাড়িতে দুইটি পুলিশ ক্যা¤প থাকলেও ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ শাপলাপুর ইউনিয়ন রয়েছে স¤পুর্ণ অরক্ষিত। মহেশখালী থানা থেকে পুলিশ এসে এই ইউনিয়নে দায়িত্বপালন করতে হয়।
মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন গত রমজানে পুলিশের ব্যবহারের জন্য মাত্র একটি গাড়ি পাওয়া গেছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে অপ্রতুল্য। এলাকা হিসাবে মহেশখালীতে কমপক্ষে ৩টি গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে। সরকারের সামর্থ অনুযায়ী গাড়ি সরবরাহ করছে এতে আমাদের করার কিছুই নেই।
চকরিয়ার শাহারবিলের মোঃ মহসিন জানিয়েছেন ১৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার আইনশৃংখলার কাজে পুলিশের গাড়ি রয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল্য। পুলিশকে কোথাও অভিযান চালাতে গেলে বিভিন্ন পরিবহন মালিকদের কাছে গাড়ি চেয়ে নিতে হয়। পশ্চিম বড় ভেওলার মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানিয়েছেন কোন কারণে থানায় খবর দিলে পুলিশ আসতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়। যার ফলে মানুষ আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে ভয় করে না।
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রণজিত কুমার বড়–য়া জানিয়েছেন ৩৯ কিলোমিটার সড়কে পুলিশের কাজের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে মাত্র ২টি সরকারি গাড়ি। তৎমধ্যে একটি প্রায় অচল হওয়ার পথে। সরকারের সাধ্যের বাইরে আমরা যেতে পারছি না। একটু কষ্ট হলেও বিভিন্ন পরিবহন মালিকদের কাছ থেকে গাড়ি চেয়ে নিতে হয়। অনেক সময় প্রয়োজনীয় সময়ে গাড়ি পাওয়া যায় না। এই উপজেলায় আরো ৩টি গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে।
রামু উপজেলার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জাফর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন এই বিশাল উপজেলার থানায় আছে মাত্র একটি গাড়ি। সমুদ্র সৈকতের হিমছড়ি পর্যন্ত বিস্তৃত এই উপজেলায় আরো ৪টি গাড়ির প্রয়োজন। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে গাড়ি না থাকলে পুলিশকে দূর্ভোগ পোহাতে হয়। এ ছাড়াও রামুতে রয়েছে পাহাড়ী এলাকা।
রামু থানার অফিসার ইনচার্জ জানিয়েছেন আমাদের করার কিছু নেই। যেটি বরাদ্ধ পেয়েছি তা নিয়ে কাজ চালাতে হচ্ছে। আরো অন্তত ৩টি গাড়ি হলে কাজে আরো গতি আসত। গাড়ির প্রয়োজনীয়তার কথা জানালেন উখিয়া, টেকনাফ, পেকুয়া ও কুতুবদিয়ার থানার অফিসার ইনচার্জরা।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ আজাদ মিয়া জানিয়েছেন গাড়ির প্রয়োজন রয়েছে। মন্ত্রণালয় সামর্থ অনুযায়ী গাড়ি বরাদ্ধ দিচ্ছে। গাড়ি সংকটের বিষয়টি উর্ধ্বতন কৃর্তপক্ষ অবহিত আছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন