সভা-সমাবেশ নিষেধ ছিল না এখনো নেই: প্রতিমন্ত্রী

এম এ আহাদ শাহীন : 
সভা-সমাবেশের ওপর আগে কোনো বিধি-নিষেধ ছিল না এবং এখনো নেই বলে দাবি করেছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু । তবে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদীদের জন্য আজীবন সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।


মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে জঙ্গিবাদ প্রতিরোধ ও প্রতিকার কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

সভা-সমাবেশে ‘নিষেধাজ্ঞা’ নিয়ে মন্ত্রণালয়ের অবস্থান জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সভা-সমাবেশের অনুমতির বিষয়ে আগে যা ছিলো এখনো সেভাবে চলছে। সমাবেশের ওপর পূর্বে কোনো বিধিনিষেধ ছিল না- এখনো নেই। যারা সভা-সমাবেশের নামে নাশকতা করবে, জানমালের ক্ষতি করবে তাদের সভা-সমাবেশের অনুমতি দেয়া হবে না।

সংবিধান সম্মত সভা-সমাবেশ চলবে জানিয়ে প্রতিমিন্ত্রী বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের নামে, ধর্মের নামে, হেফাজতের নামে মিথ্যা অপপ্রচার চালাবে, মৌলবাদকে উস্কানি দেবে, যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষার অপচেষ্টা চালাবে, জ্বালাও-পোড়াও ভাঙচুর ও নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে তাদের জন্য সভা-সমাবেশ নিষিদ্ধ। এ ধরনের সভা-সমাবেশ সংবিধান সম্মত নয়।’

অস্ত্র নিয়ে, লাঠি নিয়ে নাশকতার জন্য যারা সভা-সমাবেশ করবে তাদের কখনো অনুমতি দেয়া হবে না। এটা আইন সম্মত, যতোদিন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চলবে ততোদিন এ সিদ্ধান্ত থাকবে।

বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ রয়েছে, তাদের সভা-সমাবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। সমাবেশের অনুমতি না পেয়ে গত মাসে হরতালও করে বিরোধী দলীয় জোট।

সোমবার সংসদে সভা-সমাবেশ নিয়ে বিরোধী দলের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় প্রতিমন্ত্রী বলেন, তারা স্বারষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য না শুনেই ওয়াক আউট করেছেন, এটা কোনো গণতান্ত্রিক আচরণ নয়।

সংসদ বর্জনের জন্য বিরোধীদলের সমালোচনা করে শামসুল হক টুকু বলেন, জনগণ বলছে-তারা শুধু বেতন ও অন্যান্য সুবিধা নেয়ার জন্যই সংসদে উপস্থিত হয়ে ওয়াক আউট করেছেন।

১৮ দলীয় নেত্রী গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত থাকুক তা চান না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ, অপপ্রচার ও সাইবার ক্রাইম নির্মূল করতে বৈঠকে একটি সার্বক্ষণিক মনিটরিং কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গঠিত এ কমিটি এ সকল অপরাধীদের চিহ্নিত করে আইনের সম্মুখীন করবে। সাইবার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিটিআরসিসহ অন্যদের সহায়তা নিয়ে সাইবার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, জঙ্গিবাদ ও সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিজ্ঞাপন চিত্র, ডকুমেন্টারি, শর্টফিল্ম নির্মানের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। করপোরেট সোশ্যাল রেনপন্সিবিলিটির (সিএসআর) আওতায় এগুলো বেসরকারি ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রচারের জন্য তথ্য মন্ত্রণালয়কে উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে এ সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন করা হবে।

টুকু বলেন, জঙ্গিবাদবিরোধী প্রচারণা প্রতিটি জেলা প্রশাসন, তথ্য মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। জঙ্গিবাদ দমনে সামাজিক সচেতনতা গড়ে তোলা হচ্ছে, অতীতের সরকারের সময়ে বিভিন্ন কাযক্রমে জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তবে বর্তমান সরকারের সাড়ে চার বছরে জঙ্গিবাদীরা এ সাহস পায়নি।

সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাইন উদ্দিন খন্দকার, পুলিশ পরির্দশক খন্দকার হাসান মাহমুদ, অতিরিক্তি সচিব কামাল উদ্দিন আহমেদসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।   

উল্লেখ এর আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর চট্রগ্রামের এক অনুষ্ঠানে সারা দেশে এক মাসের জন্য সভা সমাবেশ নিষিদ্ধের কথা বলেছিলেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন