কক্সবাজারবাণীর সাহসী সাংবাদিকতায় অভিবাদন

এম এ আহাদ শাহীন
সৈকত নগরী কক্সবাজার। বাংলাদেশের দক্ষিণ পূর্ব কোণে যার অবস্থান। এজেলায় বসবাসকারী মানুষ এখন শিক্ষা-দিক্ষা,শিল্প-সাহিত্য ও চেতনায় সমৃদ্ধ।
তবে যেটি আমার সবচেয়ে বেশি চোখে পড়েছে তা হচ্ছে কক্সবাজারে মিডিয়া বা সংবাদ মাধ্যমের বিস্তার। আমি র্দীঘ দিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করলেও সহকর্মীদের সুবাদে কক্সবাজারের সংবাদ মাধ্যমগুলোর খোঁজ খবর নিয়ে থাকি। সংবাদপত্রের যে বিকাশ কক্সবাজারে হয়েছে আমি মনে করি এতে করে গণতন্ত্রের ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। দৈনিক কক্সবাজারবাণী এ জেলার জনপ্রিয় দৈনিক গুলোর একটি। পত্রিকাটি পাঠক সমর্থন আদায় করে তৃতীয় বছরে পর্দাপণ করেছে। আমি দৈনিক কক্সবাজারবাণীর দু’বছর পূর্তিতে অভিবাদন জানাচ্ছি। সাথে কক্সবাজারবাণীর সাহসী সাংবাদিকতায় আরো সাহস ও শক্তি যুক্ত হয়ে এগিয়ে যাবে এ প্রত্যাশা করছি। ফরিদুল মোস্তফা খান দৈনিক কক্সবাজারবাণীর সম্পাদক ও প্রকাশক । এছাড়া বর্তমানে তিনি নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত জাতীয় দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময় ডটকম এর কক্সবাজারস্থ আঞ্চলিক প্রধানও বটে। একই দৈনিকে ঢাকার সেন্ট্রাল ডেস্কে আমার কাজ করার সুবাদে ফরিদুল মোস্তফা খানকে যতটুকু জেনেছি তাতে যা মনে হয়েছে- তিনি কক্সবাজারে সাংবাদিকতায় একদম তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন। অল্প সময়ে প্রান্তিক সাংবাদিকতা শেষে এখন তিনি সফল সম্পাদক হয়েছেন। তাকেও আগামি দিনের পথচলায় সাহস দিচ্ছি। এখন একটু বাংলাদেশের মিডিয়া নিয়ে বলি। ছোট হয়ে আসছে মিডিয়া। বলছি বাংলাদেশী মিডিয়ার কথা। ইলেকট্রনিক বলুন আর প্রিন্ট বলুন, সবখানেই এক অবস্থা। আমাদের জানা আছে, বন্ধ হয়ে গেছে দুটি টিভি নেটওয়ার্ক। একটি সংবাদপত্র বন্ধ হয়েছে আগেই। চাপের মধ্যে রয়েছে একটি টিভি আর দুটি সংবাদপত্র। বন্ধ হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে। টিভির টকশোগুলো ভীষণ চাপের মধ্যে রয়েছে। যে কোন সময় খড়গ নেমে আসতে পারে। নব্বই দশকের পর আর কিছুর উন্নতি না হলেও মিডিয়া এগিয়ে যাচ্ছিলো। প্রশংসিত হচ্ছিলো দেশ-বিদেশে। এটা অনেকেরই পছন্দ নয়। তাই চাপ বাড়ছে মিডিয়ার ওপর।
টিভি মাধ্যমগুলো বড্ড চাপের মধ্যে। এই চাপ মোকাবিলা করার মতো শক্তি অনুপস্থিত। সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন জিইয়ে রাখা হয়েছে এজন্যই।
এই বিভাজন গোটা সংবাদ মাধ্যমকে বড় এক চ্যালেঞ্জের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। কোন টিভি বা সংবাদপত্র বন্ধ হলে বা সংকটে পড়লে এক পক্ষ দূর থেকে বাহবা দিচ্ছে। আরেকপক্ষ প্রেস ক্লাবের সামনে রাজপথে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। বিদেশী মানবাধিকার সংস্থাগুলো দুয়েকটা বিবৃতি দিয়েই ক্ষান্ত। তাদেরইবা কি করার আছে। এখানে রাজনৈতিক শক্তি অসহায়ের মতো বসে থাকে। মাঝে মধ্যে বিবৃতি দেয় অবশ্য। স্বাধীন গণমাধ্যম না থাকলে গণতন্ত্র বিকশিত হবে না এটা আমরা সবাই জানি। এর জন্য রাজনৈতিক পন্ডিত হতে হয় না। যারা রাজনীতিকে সংকুচিত করতে যাচ্ছেন বা করছেন তারাও ভাল করেই জানেন আখেরে কোন ফায়দা হবে না এতে। তারপরও তারা করছেন। অন্যরা যদি অসহায়ের মতো আত্মসমর্পণ করেন তখন এর সুযোগ কে নেবে না বলুন। যাই হোক, যেভাবে প্রেসের ওপর চাপ আসতে শুরু করেছে তাতে করে কোনদিকে যাবে পরিস্থিতি তা বলা সত্যি কঠিন। শুধু এটুকু বলা যায়, সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে মানুষ গুজবের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে শতভাগ। এর ফলে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ব্যাহত হবে। দেশের ভবিষ্যতও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।
বড়াই করে বলার মত, কোন মুসলিম দেশে সংবাদ মাধ্যম এমন স্বাধীনতা ভোগ করে না। অবাধ স্বাধীনতার নামে হটকারিতায় বিশ্বাস করি না। সব খবর অনেক সময় খবর নয়। এর একটা সীমারেখাও রয়েছে। 

লেখক : সাব-এডিটর, দৈনিক আমাদের অর্থনীতি ও আমাদের সময় ডটকম, ঢাকা। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন