উখিয়া প্রতিনিধি
উখিয়া উপজেলা ভূমি অফিসের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, খতিয়ান জালিয়াতি সহ গুরুত্বপূর্ণ গোপন তথ্য সরবরাহ এখন টক অব দা উখিয়ায় পরিণত হয়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে মারামারি, সহ নানান ঘটনা।
উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীর যোগসাজসে ভুঁয়া ওয়ারিশ সনদ ও জাল দলিল দেখিয়ে নামজারি খতিয়ান সৃজন, বিজ্ঞ আদালতের তদন্ত প্রতিবেদন সহ বিভিন্ন তদন্ত প্রতিবেদন দিতে মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্য সহ অনৈতিক ভাবে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যার কারণে সাধারণ মানুষ পদে পদে মারাত্মক হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। কেউ এসব অনিয়ম দূর্নীতির প্রতিবাদ করার সাহসও পায় না। অনেক সময় প্রতিবাদ করতে গিয়ে কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দুর্ব্যবহার ও হুমকি ধমকিতে কেউ কেউ অফিস ত্যাগ করলেও কেউ কেউ ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। ইতিপূর্বে ১ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবী করায় জনৈক চৌধুরী কর্তৃক অফিসের প্রধান সহকারী সোমেশ্বর রুদ্র গলধোলাইয়ের শিকার হন। তাছাড়া সোনারপাড়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারী তহশীলদার মোঃ জহির শারীরিক ভাবে নাজেহাল হন ক্ষমতাসীন দলের এক কর্মীর হাতে। সম্প্রীতি উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মোঃ ফখরুল ইসলাম স্থানীয় এক আওয়ামীলীগ নেতার ভাইয়ের হাতে শারীরিক ভাবে নাজেহাল হন। যা বর্তমানে মামলা পর্যন্ত গড়ায়। এভাবেই ঘটছে প্রতিনিয়ত নানা ঘটনা। কেন এসব ঘটনার সূত্রপাত হচ্ছে এ নিয়ে তদন্ত হয়না, মাঝে মধ্যে হলেও দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কর্মচারীরা পার পেয়ে যায়। যার কারনে দূর্নীতির শাখা প্রশাখা দিন দিন প্রসারিত হচ্ছে। ভূক্তভোগীদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে উখিয়া উপজেলায় জমির মূল্য অত্যধিক বৃদ্ধি পাওয়ায় কতিপয় দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রতিটি কাজে সেবা নিতে আসা সাধারণ জনগণ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। যারা দাবী পূরণ করতে পারে তাদের কাজ অনায়াসে মুহুর্তে হয়ে যায়। আর যারা দিতে পারে না তাদের ফাইল মাসের পর মাস ফাইলবন্দী হয়ে থাকে। প্রকৃতপক্ষে ঘুষের লেনদেন অত্যধিক হারে বেড়ে যাওয়ায় অনেক সময় হাতাহাতি, মারামারির মত ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটেই চলছে।
অন্যদিকে দীর্ঘ ১ যুগেরও বেশী সময় ধরে এসিল্যান্ড না থাকায় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীরা নিয়ন্ত্রনে নেয় ভূমি সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম। এখানে কর্মকর্তা বলেন আর কর্মচারী বলেন সবাই ব্যস্ত কন্ট্রাক করার কাজে। আর কন্ট্রাক ছাড়া কাজ হলে ভোগান্তি ছাড়া হয়না। আজ হচ্ছে, কাল হচ্ছে বলে ঘুরানো হয় মাসের পর মাস। নাম না বলার শর্তে ইনানী মৌজার খতিয়ান সৃজন করতে আসা এক ভূক্তভোগী এ প্রতিবেদককে জানান, অফিসে কর্মরত এক উমেদারের মাধ্যমে ইনানী মৌজার ১৮ শতক জমির একটি খতিয়ান করতে দিয়েছেন ৩ মাস পূর্বে। কিন্তু এখনো তার খতিয়ানটি হয়নি। যে উমেদারের কাছে কাজটি করতে দিয়েছি তিনি বলছেন সোমেশ্বর বাবুর কাছে যেতে। আর সোমেশ্বর বাবুর কাছে গেলে বলা হয় স্যারকে মাল (টাকা) দিতে হয়। ১০ হাজার টাকা লাগবে। দাবীর সম্পূর্ণ টাকা পূরণ করতে না পারায় আজ ৩ মাসেও কাজটি হয়নি। এমনও অভিযোগ ইনানীর শত শত ভোক্তভোগীদের। অনেকে জানায়, বাপ-দাদার আমলে এমন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা কোনদিন দেখেনি। জানা যায়, উক্ত কর্মকর্তা অফিসের কতিপয় কিছু কর্মচারী ও উমেদারদের নিয়ে সিন্ডিকেট করে মামলা কন্ট্রাক্টের মাধ্যমে প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচেছ সাধারণ জনগণ থেকে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন