ডেস্ক রিপোর্ট :
হেফাজতে ইসলাম ঢাকা মহানগর নেতারা বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে হেফাজত সম্পর্কে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ইতিহাসের জঘন্য মিথ্যাচার।”
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান হেফাজত নেতারা।
বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর হেফাজতের এক সমাবেশে হেফাজত নেতারা এসব কথা বলেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক মাওলানা নূর হোসাইন কাসেমী। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হেফাজত এ কথা জানায়।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বলেন, “৫ মে রাতে হেফাজতের সমাবেশে কোনো গোলাগুলির ঘটনাই ঘটেনি। তারা সেখানে গায়ে লাল রঙ মেখে পড়ে ছিল। তাদের শান্তিপূর্ণভাবে সেখান থেকে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।”
হেফাজত নেতারা বলেন, “প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে অকথ্য ভাষায় অশালীন কায়দায় অসত্য উচ্চারণ করে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এই পদটিকে কলঙ্কিত করেছেন। তিনি তার বক্তব্যে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত শাপলা চত্বরের গণহত্যার ঘটনায় দেড় লক্ষাধিক গোলাবারুদ ব্যবহারের হিসাবকে উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, ‘যদি এত গুলি খরচ করা হয় তাহলে তো মতিঝিলের ভবনগুলোতে গুলির চিহ্ন থাকতো। কয়েক হাজার মানুষ আহত হতো। সে দিনকার ঘটনা তো টিভিতে লাইভ প্রচার করা হয়েছে।’ আমরা মনে করি, প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যে সরকারের দৈন্যদশা ফুটে উঠেছে।”
তারা আরো বলেন, “সরকারঘেঁষা আচরণের দায়ে বিশ্বমিডিয়ার কাছে নিন্দিত বাংলাদেশের সংবাদপত্র ও মিডিয়াগুলোতে যে তথ্য ও চিত্র প্রকাশিত হয়েছে তাও প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে উপহাস করে। সেখানেও গণহত্যা এবং আওয়ামী তা-বের চিত্র জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে। বাংলাদেশের প্রশিক্ষিত যৌথবাহিনী এতো আনাড়ি হাতে গুলি চালায়নি যে, জিকিররত হেফাজতকর্মীদের পরিবর্তে তা আশপাশের ভবনে গিয়ে আঘাত করবে। সেদিনের গুলির লক্ষ্যবস্তুই ছিল শুধু হেফাজতকর্মীরা। চারদিক থেকে ঘিরে তাদের ওপর জঘন্য কায়দায় গুলি চালানো হয়েছে।”
নেতারা বলেন, “প্রকৃত সত্য তুলে ধরার অপরাধে হঠাৎ করে দিগন্ত ও ইসলামিক টিভি বন্ধ করে দেয়া হলো। আর আহতদের ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রীর অসত্য উচ্চারণ জাতিকে অবাক করেছে, খুব কাছ থেকে করা গুলিতে এবং আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডারেদের হামলায় ৫ মে শুধু শাপলা চত্বরেই পাঁচ সহস্রাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছে। এখনো তারা বিভিন্ন হাসপাতালে, বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। অনেকে সারা জীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। অনেকে অন্ধ হয়ে গিয়েছেন। অনেকে বিষাক্ত স্প্লিন্টার দেহে ধারণ করে অসহনীয় জীবনযাপন করছেন।”
সভায় উপস্থিত ছিলেন মাওলানা আবদর রব ইউসুফী, মাওলানা জাফরুল্লাহ খান, মাওলানা মুফতি তৈয়্যব হোসাইন, মাওলানা মাহফুজুল হক, মাওলানা আবুল হাসানাত আমিনী, মাওলানা আহলুল্লাহ ওয়াছেল, মাওলানা আবুল কাশেম, মাওলানা শফিক উদ্দিন, মাওলানা যোবায়ের আহমদ, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা মাওলানা শওকত আমীন, মাওলানা সাখাওয়াত হোসাইন, মাওলানা গাজী ইয়াকুব, মাওলানা আলতাফ হোসাইন, মাওলানা আনছারুল হক ইমরান প্রমুখ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন