কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে চীনের সঙ্গে চুক্তি


বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মুহাম্মদ ফারুক খান বলেছেন, আগামী এক মাসের মধ্যে কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নির্মাণে চীনের সঙ্গে চুক্তি করবে সরকার।
মঙ্গলবার রাজধানীর রূপসী বাংলা হোটেলে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। এ সময় তিনি ঢাকা ও চীনের পর্যটন শিল্পের বিকাশে একটি যৌথ কমিশন গঠনের প্রস্তাব করেন। খবর বাংলানিউজের।
মন্ত্রী বলেন, সরকার কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর করবে। আগামী এক মাসের মধ্যে বাংলাদেশ সরকার চীনের সঙ্গে বিমানবন্দর তৈরির ব্যাপারে চুক্তি করবে। এক বছরের মধ্যে রানওয়ে
নির্মাণসহ অবকাঠামো তৈরির কাজ শেষ হবে। তিন বছরের মধ্যে বিমানবন্দরের সব কাজ শেষে উদ্বোধন করা হবে।
বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এবং ইউনান ট্যুরিজম কমিশন ও চীন যৌথভাবে বাংলাদেশ-চীন পর্যটন বিষয়ক এ সেমিনার আয়োজন করে। মূলত চীন থেকে ১৫ সদস্যের একটি দল বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের আমন্ত্রণে ঢাকায় আগমন উপলক্ষে সেমিনারটির আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের চেয়ারম্যান মাকসুদুল হাসান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ঢাকার চীন দূতাবাসের চার্জ দি অ্যাফেয়ার্স কু জুয়ানহু, সফররত দলের প্রধান ইউনান আঞ্চলিক পর্যটন উন্নয়ন কমিশনের উপমহাপরিচালক চেন জেনলং এবং টাইগারস টুরসের প্রধান আবদুল মুঈদ চৌধুরী। ফারুক খান বলেন, ‘এটা ঠিক বাংলাদেশের সড়ক, রেল ও আকাশ পথের ব্যবহার বাড়াতে পারলে আরো বেশি পর্যটক বিভিন্ন দেশ থেকে আসবে। দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা আমাদের পর্যটন শিল্পের বাধা বটে।
এ সময় তিনি চীনের সঙ্গে পর্যটন শিল্প বিকাশে একটি আলাদা কমিশন গঠনের তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘দুই দেশের উদ্যোগে একটি পর্যটন কমিশন আমরা যদি করতে পারি তবে দ্বিপক্ষীয় সম্ভাব্য পর্যটন উন্নয়ন, বাংলাদেশে এ খাতে চীনের বিনিয়োগ, ভিসা সহজীকরণ ও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা যাবে সহজে।
এ সময় বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ পর্যটন শিল্প বিকাশের প্রধান বাধা দুর্বল অবকাঠামা, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও তীব্র যানজট। অভ্যন্তরীণ সড়ক, রেলপথের উন্নয়ন করতে পারলে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিমান চলাচল বাড়াতে পারলে বাংলাদেশের প্রতি আকৃষ্ট হবে বিদেশি পর্যটকরা।
কু জুয়ানহু বলেন, ঢাকা থেকে কক্সবাজারে যেতে দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে আট ঘণ্টা সময় লাগে। চীনে দুই ঘণ্টায় সমান দূরত্বের পথ পাড়ি দেওয়া সম্ভব। আবার ঝুঁকিও বাংলাদেশে বেশি। তাই পর্যটকরা আসতে চায় না। এসব সমস্যা দূর করতে হবে। প্রয়োজনে চীনও অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা দিতে প্রস্তুত।
কু জুয়ানহু বলেন, আঞ্চলিক সড়ক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। চীন থেকে মিয়ানমার হয়ে ভারতে সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করতে পারলে এ অঞ্চল লাভবান হবে। চীন যেতে ভিসা জটিলতার প্রসঙ্গ তুলে এই কূটনীতিক বলেন, ‘গত বছর প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশি ভিসা পেয়েছে। ভিসার একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। তবে ভিসা জটিলতা কোনো ছাত্র, ব্যবসায়ীর ব্যবসা ক্ষতিতে পড়ুক তা আমরা চাই না।বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য চীন সরকারের বৃত্তি ৮০ থেকে বাড়িয়ে ১৬০ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
চেন জেনলং বলেন, ‘বাংলাদেশে চীন থেকে আরো বেশি পর্যটক আসতে আগ্রহী। আমরা আশা করছি, কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলে দুই দেশে যাতায়াত আরো বেড়ে যাবে। যাতে দুই দেশই লাভবান হবে