কক্সবাজারের চকরিয়ায় তৈরি হচ্ছে জাল নোট

কক্সবাজারবাণী ডেস্ক: এক হাজার ও পাঁচশ টাকার জাল নোটে সয়লাব হয়ে গেছে কক্সবাজারের চকরিয়া। চকরিয়ায় একটি সিন্ডিকেট অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত মেশিন ব্যবহার করে এই জাল নোট তৈরি এবং বাজারজাত করার পেছনে কাজ করছে। এতে প্রতিনিয়ত প্রতারণার শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। বিনিময়ে জাল নোট সিন্ডিকেট সদস্যরা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, জাল নোট তৈরির পর তা বাজারজাত করার পেছনে সিন্ডিকেটের সাথে কাজ করছে রাজনৈতিক দলের বলয়ে থাকা প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি ও কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। এছাড়াও মাঠপর্যায়ে উঠতি বয়সের ছেলেরা (বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্ট) এই জাল নোট বাজারে ছাড়ার কাজে লিপ্ত রয়েছে।
চকরিয়া থানা পুলিশ জানায়, জাল টাকার নোট বাজারে ছাড়ার সময় মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদ ফারুক (২৫) নামের চকরিয়া কেন্দ্রীক জাল নোট সিন্ডিকেটের এক সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফারুক উপজেলার লক্ষ্যারচর ইউনিয়নের ছিকলঘাট এলাকার হাজীপাড়ার আবদুছ ছমদের ছেলে। এ সময় দেহ তল্লাশী করে তার কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে এক হাজার টাকার ৯টি ও পাঁচশত টাকার ৩টি জাল নোট।
গ্রেপ্তারের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফারুক স্বীকার করেছে, সে জাল নোট সিন্ডিকেটের সক্রিয় সদস্য হলেও একেবারে নিম্নস্তরের। শুধুমাত্র পারিশ্রমিকের ভিত্তিতে সে জাল নোট বাজারজাত করার পেছনে কাজ করে আসছে। এর পেছনে বড় ধরণের একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। এমনকি জাল নোট তৈরি করতে সিন্ডিকেটটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত মেশিনও ব্যবহার করছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া চকরিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আমীরুল ইসলাম বলেন, ‘মূলত ঈদকে সামনে রেখে চকরিয়া কেন্দ্রীক একটি বিশাল সিন্ডিকেট জাল নোট তৈরি এবং বাজারজাত করার পেছনে কাজ করছে। তাদের এই কর্মকাণ্ড শুরু হয়েছে গত এক সপ্তাহ আগে থেকে।’
এসআই আমিরুল আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃত ফারুক মঙ্গলবার রাতে পৌর শহরের একাধিক ফলের দোকান থেকে ১ হাজার টাকার জাল নোট দিয়ে বিভিন্ন আইটেমের ফল কিনেন। একইভাবে আরেকটি ফলের দোকানে গিয়ে ১ হাজার টাকার নোট দিয়ে ফল কিনতে গেলে ব্যবসায়ীর সন্দেহ হয়। কৌশলে সময়ক্ষেপন করে পুলিশে খবর দেন ওই ব্যবসায়ী। এ সময় হাতেনাতে ফারুককে জালনোটসহ গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ফারুকসহ আরো অজ্ঞাত ৫-৬জনের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা রুজু করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘জালনোট বাজারজাত করার সময় গ্রেপ্তারকৃত ফারুককে আজ (গতকাল) আদালতে তোলা হয়। এ সময় আদালতের বিচারকের কাছে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে ফারুককে জিজ্ঞাসাবাদ করতে। তবে রিমান্ড চেয়ে করা আবেদনের শুনানী হয়নি।’
এ ব্যাপারে চকরিয়া থানার ওসি রণজিৎ কুমার বড়–য়া বলেন, ‘জালনোটসহ গ্রেপ্তারের পর ফারুককে ছাড়িয়ে নিতে সরকারি দলের প্রভাবশালী বেশ কয়েকজন নেতা তদবির শুরু করেন। কিন্তু তাদের তদবিরে কান না দিয়ে মামলা রুজু করা হয়।’ ওসি জানান, জাল নোট তৈরির পেছনে চকরিয়া কেন্দ্রীক একটি বিশাল সিন্ডিকেট কাজ করছে এবং তাদের কাছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত মেশিনও রয়েছে বলে পুলিশের কাছে তথ্য আসতে শুরু করেছে। তাই তদন্তের স্বার্থে এসব বিষয়ে ¯পষ্ট করে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন