ঈদ পরবর্তী আন্দোলন : হোটেল মোটেল জোনে নেতিবাচক প্রভাব

বুকিংমানি ফেরত নিচ্ছে পর্যটকরা

কক্সবাজারবাণী ডেস্ক: জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের প্রতিবাদ ও তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা পূণর্বহালসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ঈদের পরে সরকার পতন আন্দোলনের ডাক দিয়েছে বিরোধীদল। এ সময় হরতাল অবরোধের মত লাগাতার কর্মসুচির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঈদ পরবর্তী এ কর্মসুচিতে হোটেল মোটেল জোনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ইতিমধ্যে অনেক হোটেল থেকে বুকিংমানি ফেরত নিয়েছে পর্যকরা। এতে করে পর্যটন শিল্পে জড়িতরা ব্যবসা নিয়ে পড়েছেন মহা টেনশনে।

প্রতিবছর ঈদের পর শুরু হয় পর্যটনের ভর মৌসুম। এ মৌসুমে কক্সবাজারের পর্যটন এলাকাগুলোতে প্রচুর লোক সমাগম হয়। দেশ ছাড়িয়ে বাইরের লোকজনেরও দেখা মেলে এখানে। এ সুযোগে হোটেল ব্যবসায়ীরা ছাড়া সাধারণ রিক্সা চালকদের পকেটও গরম থাকে। ইতোমধ্যেই কক্সবাজার শহরের ছোট-বড় ৪ শতাধিক হোটেল-মোটেল, গেষ্ট হাউস ও কটেজের অধিকাংশ কই অগ্রীম বুকিং হয়ে গেছে। পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নতুন করে সাজানো হচ্ছে পর্যটন স্পটগুলো।

সুত্র জানায়, নিকট দুই বছরের রাজনৈতিক অস্থিরতায় শহরে বন্ধ হয়ে গেছে অর্ধ শতাধিক হোটেল-রেস্তোঁরা। চাকরী হারিয়েছে দশ হাজারেরও বেশি কর্মকর্তা কর্মচারী। এমন পরিস্থিতিতে রোজার ঈদকে সামনে রেখে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় ছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু হঠাৎ করেই হরতালের ঘোষণায় হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। বিশেষ করে ঈদের পর জামায়াতের হরতালের কর্মসূচী ঘোষণায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে কক্সবাজারে বিনিয়োগকারীসহ পর্যটন ব্যবসায়ীরা।

বিগত অধিকাংশ সময়ে সরকার ও বিরোধীদলের টানাপড়েনের কারণে ব্যবসায়ীদের তাদের অর্থিক ক্ষতি এ ঈদে পুষিয়ে নেয়ার চিন্তা করলেও ফের রাজনীতির রোষানলে পড়তে যাচ্ছে তারা। সরকারের শেষ সময় হওয়ায় বিরোধীদল থাকবে মারমুখি অবস্থানে আর সরকার থাকবে গদি না ছাড়ার ফন্দি ফিকিরে। এমন অবস্থায় উত্তোরণের কোন জ্যু দেখছেন না রাজনীতি বিশ্লেষকরা।

হোটেল মালিকরা জানান, ইতিমধ্যে প্রায় হোটেলে শতকরা ৮০ ভাগ ক অগ্রীম বুকিং হয়ে গেছে। ঠিক এ সময়ে উচ্চ আদালতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণার প্রতিবাদে ঈদের দুই দিন পর ১২ ও ১৩ আগষ্ট হরতালের কর্মসূচী ঘোষণা করেছে দলটি। এ কারণে হোটেল বুকিং বাতিল করে টাকা ফিরিয়ে নিতে শুরু করেছে পর্যটকেরা।

রাজনীতি সচেতনমহলের ভাষ্য মতে, স্বাভাবিকভাবে যে কোন সরকারের শেষ সময়ে এসে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দু’পক্ষই থাকে ছাড় না দেয়ার মানসিকতায়। পর্যটন ব্যবসার ভর এ মৌসুমে রাজনীতির লু-হাওয়ায় চরম হতাশায় ভেঙ্গে পড়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।

হোটেল মোটেল ব্যবসায়ী নেতা রেজাউল করিম রেজা বলেন, ঈদের পরে ফের হরতাল ঘোষণার খবরে পর্যটকেরা হোটেল বুকিং এর টাকা ফেরত নিয়ে যাচ্ছে। এতে করে পর্যটন শিল্পে ধস নেমেছে।

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেষ্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম সিকদার বলেন, ‘এ হরতাল আমাদের সকল আশায় গুড়েবালি হলো। পর্যটকরা বুকিংমানি ইতিমধ্যেই ফেরত নিয়ে গেছেন।’

শহরের নবান্ন রেস্তোঁরার মালিক ও হোটেল মোটেল রেস্তেুাঁরা মালিক সমিতির উপদেষ্টা রাজনীতিবিদ নাঈমুল হক চৌধুরী টুটুল জানান, ঈদ পরবর্তী বিরোধীদলের কর্মসুচি পর্যটনশিল্পে মারাতœক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। গত বেশ কয়েকমাস ধরে লাগাতার আন্দোলন পরবর্তী ফের এ কর্মসুচি মরার খারার ঘা হয়ে দাঁড়াবে। এ সময় পর্যটন নগরী বিবেচনায় কক্সবাজারকে হরতালের আওতামুক্ত রাখার দাবী জানান তিনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন