চকরিয়ায় কথিত শিল্পী ডাক্তারের অপচিকিৎসার ছোবল থেকে আমাদের বাঁচান

ভ্রাম্যমান আদালতের জন্য জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনের কাছে ভুক্তভোগীর আবেদন

চকরিয়া সংবাদ দাতা: চটকদারী ভিজিটিং কার্ড ও সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে মানব স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলায় জড়িত থাকার অভিযোগে চকরিয়ার বহুল আলোচিত, সমালোচিত কথিত ডাক্তার ইসরাত জাহান শিল্পীর শাস্তি চায় ভুক্তভোগীরা। এজন্য জনস্বার্থে তড়িৎ ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান অতঃপর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টরা কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জনসহ প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের তড়িৎ হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। ফলে জনস্বার্থে এক ব্যক্তি ইতিমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী, সচিব, জেলা প্রশাসক,
চট্টগ্রাম বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, ঔষুধ তত্ত্বাবধায়কসহ সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ের নিকট একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছেন। প্রতারণার হাত থেকে দেশ, মাটি ও মানুষ বাঁচাতে কথিত শিল্পী ডাক্তারের বিরুদ্ধে দেয়া উক্ত অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, এমবিবিএস পাস না করা সহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিধি উপেক্ষা করে চিকিৎসক হিসেবে চেম্বার করার তার নৈতিক কোন অধিকার না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে তিনি চকরিয়া সেন্ট্রাল হাসপাতাল, মহেশখালীর কালারমারছড়া করিম ফার্মেসী, হারবাং শান্তা মেডিকেল হলসহ প্রতি শুক্রবার নিজ বাসায় তিনি হরদম ব্যবস্থাপত্র দিয়ে চিকিৎসকতা করে আসছেন। শুধু তাই নয়, কথিত উক্ত মহিলা নিজের বাণিজ্যিক ফায়দা লুটতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী ক্লিনিকে বেশ কিছু দালালও নিয়োগ দিয়েছেন। যারা প্রতিনিয়ত শিল্পীকে মা ও স্বাস্থ্য, ধাত্রী বিদ্যায় বিশাল ডাক্তার পরিচয় দিয়ে রোগী এনে দেয়।
জানা গেছে, ডাক্তার পরিচয়দানকারী উক্ত শিল্পীর বিরুদ্ধে একের পর এক বিয়েসহ যৌন কেলেংকারীর অভিযোগে ইতিপূর্বে গণমাধ্যমে বেশ লেখালেখিও হয়েছে। এতে করে পুরো চিকিৎসক সমাজের ভাবমুর্তি ক্রমশঃ রসাতলে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, শিল্পীর বিরুদ্ধে অবৈধ গর্ভপাতসহ নারী স্বাস্থ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলে অর্থ উপার্জনের পাশাপাশি এলাকায় আরো বিভিন্ন প্রকার মুখরোচক আলাপ-আলোচনা আছে। যা সংযত কারণে পত্রিকায় প্রকাশের ভাষাও নেই।
অভিযোগ উঠেছে, ব্যক্তিগত জীবনে বীমাকর্মীর মতো অত্যন্ত বিচক্ষণতা ও শারীরিক সৌন্দর্য্যকে পুঁজির পাশাপাশি ঘাঁটে ঘাঁটে টাকা-পয়সা দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ডাক্তার না হয়েও বিভিন্ন জায়গায় চেম্বার করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেশের প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে, শুধু তাই নয়, তার অপ-চিকিৎসার শিকার হয়ে অনেকেই অর্থনৈতিক, শারীরিক ও মানসিক ভাবে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। এদিকে শিল্পীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসা করা-না করা প্রসঙ্গে চকরিয়া সেন্ট্রাল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ এনামুল হকের সাথে মুঠোফোনে আলাপ করলে তিনি শিল্পী সেন্ট্রাল হাসপাতালে চেম্বার করে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে বলেন, তিনি মূলত আমাদের ক্লিনিকের কর্মচারী। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিল্পীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
তবে শিল্পী নিজেকে এমবিবিএস পাশ দাবি না করলেও বলেন, আমি ডাক্তার। কারণ সিপিএম (আইসিডিডিআরবি) মা, শিশু স্বাস্থ্য ও ধাত্রী বিদ্যায় আমার প্রশিক্ষণ রয়েছে। 
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কমকর্তা জানান, শিল্পীর যে সমস্ত ডিগ্রি গুলো রয়েছে তা দিয়ে তিনি বড় বেশি হলে কোন হাসপাতাল-ক্লিনিকে নার্সের চাকুরি করতে পারেন। তিনি কোন অবস্থায় রোগি দেখার চেম্বার করতে পারেন না। আর তার ডিগ্রিগুলোর মধ্যে আইসিডিডিআরবি নামে যে ডিগ্রিটা রয়েছে এটা আসলে কিছুই না, জিনিসটা মূলত ডায়েরিয়া সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ। অতএব, স্থানীয় ভ্রাম্যমান আদালত যেকোন সময় রোগিসহ তাকে আটক করে বিধি মোতাবেক শাস্তি দিতে পারেন। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন