হাসি দিয়ে যায় চেনা



বাণী ডেস্ক: এ তো মহা গেরো। ক্লাস শেষে নোবেলের সঙ্গে আর কেউ কথাই বলে না। বন্ধুরা তো দূরের কথা, প্রেমিকা নীলাঞ্জনা পর্যন্ত মুখ বেঁকিয়ে ক্যান্টিনে ঢুকে পড়েছে। অবশ্য দোষের কথা আছে বইকি। দোষের মধ্যে নোবেলের হাসি। যেকোনো কথাতেই নোবেলের অমন 'ফ্যা ফ্যা' আওয়াজ করে হাসি নাকি ভীষণ গাঁইয়া। এ নিয়ে নীলাঞ্জনা এর আগে বহুবার খোঁটা দিতে ছাড়েনি! কিন্তু স্বভাব যায় না মলে! আর সেই স্বভাবের বিপাকেই পড়েছে বেচারা নোবেল। সদ্য প্রেমে হাবুডুবু অদ্রিজার নব-প্রেমিকের একটা টুপি মাথায় ছবি দেখে নোবেলের অমন 'ফ্যা ফ্যা' ছড়িয়েছে। ব্যস, সকলের সামনে দু'কথা শুনিয়ে অদ্রিজা একেবারে ক্লাস গরম করেছে। ঠারেঠোরে ক্লাসে বুঝিয়ে দিয়েছেন অমন হাসি নাকি নোবেলের 'মফস্বলি' টাইপ; অন্যকে ছোট দেখানোর মানসিকতা। তালেগোলে বেশ খেপেছে নীলাঞ্জনাও।
তা, নোবেলের মতো এমন বিপাক আমাদের কার না জীবনে আসে? এমনিতে হাসি আয়ুষ্কাল বাড়াতে সক্ষম হলেও, এই হাসির রকমফেরেই মানইজ্জত একেবারে খুইয়ে বসে অনেকে। হাসি দেখে না মজে, খচে গিয়ে কত না জানি সম্পর্ক গেল। তা একেবারেই সামাজিক কেচ্ছা নয়। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, হাসির ধরনেই নাকি লুকিয়ে থাকে মানুষের মনের গোপন কথাটি। সে পরে মুখ যতই কাঁচুমাচু হোক, ঠিকঠাক অ্যানালিসিস, বের করে আনবে মনে গহ্বরে লুকিয়ে থাকা আসল কথাটা। হিংসে, ভালবাসা থেকে শুরু করে সেক্সের ধরনও নাকি চুপ মেরে বসে থাকে হাসির এহেন প্যাখনায়।

আমাদের অনেকেই তো গুরুজনের সিরিয়াস টকে 'হো হো' দন্তবিকাশে কত না হেনস্থাই হয়েছি! এবার থেকে দাঁত বের করা বা না করার আগে একটু সামলে ভাই। মধ্য আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল মনোবিজ্ঞানী জানাচ্ছেন, 'আমাদের হাসির ধরনের মধ্যেই কিন্তু আমাদের মনের ভাব লুকিয়ে থাকে। ধরে নেয়া হয় যারা জোরে হাসেন, তারা বড় প্রাণখোলা। কিন্তু এই উদ্দামতায় মিশে থাকে ক্রুরতা ও অবহেলা। চারপাশকে তোয়াক্কা না করেই এরা ইমোশন প্রকাশ করেন। এই ধরনের মানুষ ভীষণ দিলদার ও একই সঙ্গে খুব নিষ্ঠুর হতে পারেন। আবার যারা যেকোনো অবস্থাতেই মুখ টিপে হেসে কাজ সারেন, তারা বড় কৃপণ।

এই কার্পণ্য সেক্সের সময়ও দেখা যায়। এরা আদরেও বড় অলস। সামাজিক বিধির তোয়াক্কা না করেই অনেকে কারণে-অকারণে হেসে ওঠে অনেকে। অতিরিক্ত আবেগী হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এরা অন্যকে ভীষণ ছোট করেও দেখান'। এখন এইসব শুনে অনেকেই চোখ কপালে তুলতে পারেন। চাই কি কেউ পাশের লোকটাকে রেগেমেগে দু'কথা শুনিয়েও দিতে পারেন। কিন্তু ভেবে দেখুন তো আপনার অজান্তেই কেমন অনেক কিছু হয়ে চলেছে।

যারা এবার হাসতে গেলে কিছু চাপতে যাবেন তাদের কিছুটা হলেও আশ্বস্ত করছেন মনোবিদরা।তারা বলছেন, 'এ রকম নির্দিষ্ট করে কিছু বলা যাবে না।তবে এটুকু বলা যায় সাইকোলজি সবার বিষয়ে এক হলেও ভূগোল ভেদে পার্থক্য আছে। আমেরিকা বা ইউরোপের দেশগুলিতে যা সামাজিক নর্মস তা আমাদের দেশে নয়। আর মানুষের মন অমন গুণ-ভাগের নিক্তিতে মাপা যায় না'।

অনেকে হাফ ছেড়ে বাচলেন বুঝি? তবু সাবধান হতে দোষ কী! কারণের হাসি আর অকারণে নয় মোটেই, এটুকু মাথায় রাখলেই অনেকটা বাঁচোয়া। সূত্র: ওয়েবসাইট।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন