কক্সবাজারে সুবিধা বঞ্চিত শ্রমজীবী শিশুদের জন্য গড়ে উঠেনি কোন পরিকল্পনা

সাঈদ রহমান: ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর সারা দেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালিত হয় শিশু অধিকার সপ্তাহ এবারও এর বিপরীত কিছুই হচ্ছে না উৎসাহ-উদ্দিপনা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে গত ২৯ সেপ্টেম্বর কক্সবাজারে শিশু অধিকার সপ্তাহ উদ্বোধন হয়েছে তবে সে অনুষ্ঠানে লক্ষো করা যায়নি কোন সুবিধা বঞ্চিত শ্রমজীবী শিশুদের
জেলা শিশু একাডেমী কর্তৃক আয়জিত সপ্তাহব্যাপী অনুষ্ঠান সূচীতেও নেই সুবিধা বঞ্চিত শ্রমজীবী শিশুদের জন্য উল্ল্যেখ যোগ্য আয়োজন সাত দিনের কর্মসূচীতে শুধুমাত্র একদিন রয়েছে স্বল্প সুবিধাভোগী সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সমাবেশ
জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে শিশু শ্রম, বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান মূলত কোমলমতী শিশুদের অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে এক প্রকার বাধ্য করে শিশুদের বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত করছে এক পর্যায়ে কারণে-অকারণে শিশুদের ভাগ্যে জোটছে শারীরিক, মানষিক শোষন সহ নানা নির্যাতন কখনো আবার বৈষম্যের শিকার হচ্ছে শিক্ষার আলোর সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে অগনিত অসহায় শিশু জানা যায়, প্রতি বছর ১২ জুন পালিত হয় বিশ্ব শিশু শ্রম প্রতিরোধ দিবস বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুদের অধিকার আদায়ের লক্ষে সচেতনতা বাড়ানোর বদৌলতে দিন ব্যাপী চলে নানা কর্মসূচী ফলে বিশেষ করে সেমিনার সি¤পুজিয়াম থেকে সভায় একমত হয়ে এক বাক্যে শপথের মাধ্যমে শিশু শ্রম বন্ধের উদ্দ্যোগ নেওয়ার প্রতিশ্রতি বদ্ধ হলেও সময়ের ব্যবধানে কেবল মাত্র দিনটি অতিবাহিত হওয়ার পর বাস্তবে তা সঠিক আকারে মূল লক্ষে পৌছায় না একাধিকজনের সাথে আলাপকালে জানা যায়, বর্তমানে শ্রম বাজারে জেলার বিভিন্ন স্থানে কোমলমতী শিশুদের শ্রমকাজে খাটাচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মালিক পক্ষ
বলতে গেলে শোষকের কাজে শিশু শ্রম বিশেষ করে নিু বিত্তদের দারিদ্রোর অন্তরালে সংসারের অভাব, দারিদ্রতা এবং পরিবারের সদস্য সংখ্যা বেশী হয়ে যাওয়ায় উক্ত পরিবারের সদস্যরা শিক্ষা বঞ্চিত অগ্য অভিভাবকদের আর্থিক সুবিধা ক্ষুধার রাজ্যে যুদ্ধ করে এক প্রকার বাধ্য হয়ে পড়ে প্রলোভনে লোভনীয় প্রস্তাবের বিনিময়ে ঐসব কোমলমতী শিশুরা শিক্ষার বই-খাতা-কলমের পরিবর্তে নিরোপায় হয়ে প্রবেশ করে শ্রম জগতে প্রতিটি শিশু সু-শিক্ষার ধ্যান, ধারণা বিদ্যালয়ে যাওয়ার মনমানষিকতা থাকলেও অভাব হয়ে উঠে সবচেয়ে বড় বাঁধা ফলে এসব শিশুরা এখন শিক্ষার কাছ থেকে পরাজিত হয়ে দারিদ্রের কাছে ঝুঁকছে কক্সবাজার জেলা শহর সহ উপজেলা জুড়ে অসংখ্য শিশু ঝুঁকিপূর্ণ মরণ পেশায় নিয়োজিত রয়েছে অবুজ শিশু-কিশোররা লবণের মাঠ, বিষের দোকান, শুটকি মহল, ইটভাটায় ইটভাঙতে, সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া নৌকায় ভাত রান্না করার কাজে, ওয়ার্কসপে ওয়েল্ডিং করার কাজে, কিটনাশক বিক্রির দোকানে, হোটেল রেস্তোরায়, সাগরে পোনা আহরণ সহ কঠিন নানা ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় নিয়োজিত থাকতে দেখা যায় প্রতিক্ষণে প্রতিমুহুর্তে
শহরের এক হোটেলের গ্লাস বয় আরিফ, আলমগীর শরিফত উল্লাহ জানান, আমরা সকাল ০৮ টা থেকে রাত ১২ টা পর্যন্ত একটানা পরিশ্রম করে মজুরী পায় মাত্র ৯০ টাকা এনিয়ে পরিবার চলাতো দুরের কথা, নিজেও চলা কঠিন হয়ে পড়ে এভাবে আর কতকাল? একটি অসাধু মহল প্রত্যান্ত গ্রামাঞ্চলের কচি-কাঁচা কোমলমতি শিশুদের ঝুঁকিপূর্ণ কাজের মত হীনকাজে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠছে আবার, নিষিদ্ধ পলিথিন বিক্রয়ের কাজে ব্যবহার করে মালিক পক্ষরা এসব কোমল মতি শিশুদের নানা উপায়ে টাকা পাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে আটকে রেখে মানসিক ভাবে নির্যাতন করার অভিযোগও রয়েছে

পক্ষান্তরে কাগজ কুড়ানো, ঝিনুক বিক্রি, বেকারী, ফেরী ওয়ালা, যানবাহনের হেলপারের কাজে নিয়োজিত করেছে এক শ্রেণীর কতিপয় স্বার্থান্বেষী মহল এছাড়া মরনাÍ ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় কাজ করতে গিয়ে দূর্ঘটনায় শিকার হয়ে অনেকেই অকালেই ঝরে পড়ে মৃত্যুর কোলে আবার অনেকে পক্সগুতের অভিশাপ নিয়ে জীবন-যাপন করছে সচেতন মহলের মতে, শিশু অধিকার আদায়ের লক্ষে বিভিন্ন সংগঠন কাজ করলেও তা থাকে কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ ক্ষেত্রে শিশুরা শ্রমের পাশাপাশি নির্যাতনে শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত শারীরিক, মানষিক ভাবেও আক্রান্ত হচ্ছে জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা আহসানুল হক বলেন, এবার আমাদের কর্মসূচীতে শ্রমজীবী শিশুদের নিয়ে আয়োজন নেই আবার আছেও যেমন স্বল্প সুবিধাভোগী সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের সমাবেশে অনেক শ্রমজীবী শিশুদের অংশগ্রহণ ছিল তবে এবারের আয়োজনে ইউনিসেফের গাইড লাইন ছিল সে ভাবে আমাদের কর্মসূচী সাজাতে হয়েছে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন