দেশে দরকার সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চার বিকাশ

কানিজ ফাতেমা : অন্ধকার সুরঙ্গের পথে যাচ্ছে দেশ। হুমকির মুখে দেশের গণতন্ত্র আর এই সুযোগে তৈরি হচ্ছে অরাজনৈতিক শক্তি। এমন আশংকার কথা জানিয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্প ধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরী। আর কার্যকর সংলাপের মাধ্যমে সংকট সমাধানের কোনো আশা দেখছেন না এলডিপি সভাপতি কর্ণেল(অব.) অলি আহম্মেদ। বেসরকারি এক টেলিভিশন চ্যানেলে দেশের বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন এই দুই বর্ষীয়ান রাজনীতিবীদ।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০০৮ সালে ২৮ অক্টোবর রাজপথের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঢাকাসহ সারাদেশে নিহত হয়েছিল ১১জন। সাত বছর পর একই দাবিতে এই অক্টোবরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে সারাদেশ। ২৭ থেকে ২৯ অক্টোবরের টানা ৬০ ঘন্টার হরতালে মারা যায় ২০ জন।

২০০৬ সালের অক্টোবরের সংঘর্ষ, রাজনীতিতে নিয়ে আসে জরুরী অবস্থার সরকার। এবারের অক্টোবরের ধারাবাহিকতায় বিপন্ন হতে পারে দেশের গণতন্ত্র। আর এমনই আশঙ্কা করছেন এই দুই রাজনীতিবিদ। 

বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, রাজনীতি দেখেছি বহুদিন। কিন্তু এবারের রাজনৈতিক যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাতে শাšিত্মপূর্ণভাবে এর সমাধান হবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের সম্ভাবনা খুবই কম দেখা যাচ্ছে। আর যদি নির্বাচন হয়েও যায় তাহলে প্রধান বিরোধীদল বিএনপি যাবে না, বিকল্পধারাও যাবে না। যার ফলে এই সংসদ নির্বাচনটি প্রায় একদলীয়-একপক্ষ নির্বাচনে পরিণত হবে। তাতে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হবার আশংকা থাকবে। 

অপরদিকে এলডিপি’র সভাপতি কর্ণেল(অব.) অলি আহম্মেদ বলেন- আজকে সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ, র‌্যাব দিয়ে যেভাবে নির্যাতন চালাচ্ছে তাতে বুঝা যায়, জোর জবরদ¯িত্ম করে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। এর লক্ষণ ভালো না এবং এর পরিণতিও ভালো হবে না বলে তিনি মšত্মব্য করেন। আর এই ধরণের কর্মকান্ডের মাধ্যমে গণতন্ত্র কখনও সঠিক পথে থাকতে পারে না বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন।

বার বার হোচট খাওয়া বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে এবারও তৎপর জাতিসংঘসহ প্রভাবশালী দেশ এবং সেসব দেশের কূটনৈতিকরা। অনেক নাটকীয়তার পর প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধীদলীয় নেতার টেলিফোনে সংলাপের বিষয়টি নিয়ে বদরুদ্দোজা চৌধুরী ও অলি আহম্মেদ বলেন, এতে সংকট সমাধানের পরিবর্তে বেড়েছে হতাশা। 

বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেন, দুই নেত্রীর মধ্যে কথা হলেও সেটি ফলপ্রসু হবেনা। সবসময় শুধু বিরোধী দলকেই দোষ দিলে হবেনা। রাজনীতি তো একটা খেলা। এই খেলায় প্রধানমন্ত্রী ব্যর্থ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী যদি একটু উদারতার পরিচয় দেন তাহলেই দেশ রক্ষা পাবে। দেশ এখন অন্ধকার গলির পথে ঢুকে যাচ্ছে বলে সংশয় প্রকাশ করেন তিনি।

অন্যদিকে অলি আহম্মেদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী একেক সময় একেক রকম বক্তব্য দিয়ে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করে দিচ্ছেন। এখন প্রশ্ন- দেশের গণতন্ত্র সঠিক পথে চলবে কিনা? তত্ত্বাবধায় সরকার পদ্ধতি বহাল হবে কিনা?  

এই দুই নেতাই মনে করেন সুষ্ঠু রাজনৈতিক চর্চার বিকাশ ঘটাতে না পারলে রাজনৈতিক তৃতীয় শক্তির উত্থানে বার বার হোঁচট খেতে পারে তৃতীয়  বিশ্বের এই দেশটির গণতন্ত্র। এনটিভি

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন