ঈদগাঁওতে মোটর সাইকেল পোড়ানোর জেরে বদলী

ঈদগাঁহ প্রতিনিধি: নানা অপকর্মের হোতা, প্রশাসনের ভাবমুর্তি ক্ষুন্নকারী ঈদগাঁও পুলিশের বিশেষ আনসার পুলিশ কর্মকর্তা দাবীদার লোকমানকে গত বৃহস্পতিবার ঈদগাঁও বাজারে মোটর সাইকেল পোড়ানোর ঘটনার জেরে অবশেষে বদলী করা হয়েছে। তার বদলীর সংবাদে সাধারণ লোকজনের পাশাপাশি খোদ পুলিশ সদস্যদেরও সন্তোষ প্রকাশ করতে শোনা যায়। বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে তার নানা অপকর্মের খতিয়ান। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এ লোকমান বিশেষ আনসার সদস্য হিসাবে দীর্ঘদিন ধরে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত থাকাকালে এলাকার বিভিন্ন স্থানে নিজেকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে উৎকোচ-চাঁদা আদায়ের জাল বিস্তার করে। সে কাঠ ব্যবসায়ী, পরিবহন, জুয়াড়ী, পতিতা, বিরোধী জায়গা জমি, গাড়ী পার্কিং এমনকি মোটর সাইকেল চালকদেরও নানাভাবে প্রশাসনের ভয় দেখিয়ে মাশুহারা আদায় করে যাচ্ছিল। হয়রানির ভয়ে সাধারণ লোকজন তার বিরুদ্ধে মুখ খুলেনি।

সম্প্রতি ঈদগাঁও জালালাবাদ রবার ড্যাম এলাকার এক স্কুল ছাত্র মোবাইলে কথা বলার সময় সে আচমকা মোবাইলটি কেড়ে নিয়ে তাকে জিম্মি করে অন্যকে দিয়ে ছাত্রের মাকে পর্যন্ত বাড়ি থেকে ডেকে এনে টাকা আদায় করে ছাত্রটিকে ছেড়ে দেয়। এছাড়া ঈদগাঁওয়ের নানা শ্রেনির অপরাধী ও পতিতার সাথে তার উঠাবসা ছিল চোখে পড়ার মত।

এমনকি পুলিশ কোন বিশেষ অভিযানে যাওয়ার সময় সে গোপনে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে অপরাধীদের এ তথ্য ফাস করে দেয় বলেও এলাকায় প্রচার আছে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার ৫ নভেম্বর ঈদগড়ের এক তরুণকে পুলিশ কর্মকর্তা পরিচয়ে ধমক দিয়ে জোর পূর্বক তার মোটর সাইকেলটি নিয়ে যাওয়ার পথে জামায়াত শিবিরের সমাবেশ চলাকালে কর্মীদের অনুরোধের তোয়াক্কা না করে সে মোটর সাইকেল চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কর্মীরা তাকে ধাওয়া করে। এতে সে মোটর সাইকেলটি ফেলে পালিয়ে গিয়ে নিজেকে রক্ষা করে।

এ সময় বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তাতে আগুন লাগিয়ে দেয়। সাধারণ লোকজন, ব্যবসায়ী ও খোদ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক পুলিশ সদস্য জানান, উক্ত আনসার লোকমান যেন এক বড় কর্মকর্তা। কোন কিছুর তোয়াক্কা না করে কর্মকর্তাদের ফাঁকি দিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ এ সব অপকর্ম চালিয়ে প্রশাসনের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করে চলছিল। গত পরশুর ঘটনায় তার বহিঃপ্রকাশ। উক্ত ঘটনার জেরে শুক্রবার দুপুরে তাকে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র থেকে মডেল থানায় বদলী করা হলেও সে ফের ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে ফিরতে বিভিন্ন মাধ্যমে পদস্থ কর্মকর্তাদের নিকট ধর্না দিচ্ছে বলে সুত্রে প্রকাশ।

এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এদিকে তার বদলীর বিষয়ে জানতে চাইলে তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মনজুর কাদের ভুইয়া এর সত্যতা স্বীকার করেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন