শাহপরীরদ্বীপে ৮ ফুট জলোচ্ছ্বাস, বেড়িবাঁধ লণ্ডভণ্ড

ফরিদুল মোস্তফা খান, কক্সবাজার থেকে, ২৯.০৫.২০১৩
৩দিনের টানা বর্ষণের সাথে পূর্ণিমার ‘জো’ মিলে প্রবল জোয়ারে সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছে শাহপরীরদ্বীপ ও সাবরাং এর বেড়িবাঁধ। এতে উপকূলীয় এলাকার নিম্মাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ৩৫ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ইউএনও’র নির্দেশে পিআইও গতকাল ২৮মে সরেজমিন ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বাঁধের বিভিন্ন অংশে নতুন করে ভাঙ্গন ধরেছে। সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ভাঙ্গন এবং প্লাবিত হয়ে ২ শতাধিক পানের বরজ, শত শত একর রবি শস্য, ১৫টি চিংড়ি ঘের এবং প্রায় ১ হাজার বসত বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
টেকনাফ উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ শফিক মিয়া ২৮ মে দুপুরে উক্ত তথ্য নিশ্চিত করে জরুরী ভিত্তিতে এলাকাবাসীর জানমাল রক্ষার্থে “ ইমার্জেন্সী ওয়ার্ক ”এর ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্তৃপক্ষের প্রতি দাবী জানিয়েছেন। তিনি আরও জানান- ২৫, ২৬ ও ২৭ মে টানা বর্ষণেল সাথে পূর্ণিমার ‘জো’ মিলে সাগরের প্রবল জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৬/৭ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে গত ৮/১০ বছর ধরে ‘ইমার্জেন্সী ওয়ার্ক’ না করা ক্ষয়প্রাপ্ত ও ক্ষতিগ্রস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৬৮নং ফোল্ডারের বেড়িবাঁধ ডুবে গিয়ে সাবরাং এর উপকুলবর্তী গ্রাম কচুবনিয়া, হারিয়াখালী, লাফারঘোনা, পুর্ব নয়াপাড়ার বিস্তীর্ণ এলাকায় সাগরের জোয়ারের পানি ঢুকে বসতঘর,পানবরজ, রবিশষ্যের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে । তাছাড়া চিংড়ি ঘের ও পুকুর ডুবে গিয়ে কোটি কোটি টাকার মাছ ভেসে গিয়েছে । সাবরাং ৩নং স্লুইচ এবং টেকনাফ বিজিবি ক্যাম্পের পাশে নতুন করে বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে । ইমার্জেন্সী ওয়ার্কের মাধ্যমে জরুরী ভিত্তিতে টেকনাফের উপকুলীয় বেড়িবাঁধ সংস্কার মেরামত করা সা হলে তা যেকোন সময়ে সম্পুর্ণ বিধ্বস্থ হয়ে জানমালের অপুরণীয় ক্ষতি হওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন । উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ শফিক মিয়া অতীতের সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করে টেকনাফের উপকূলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৭-৮ ফুট উচু  জলোচ্ছ্বাস হয়েছে । তার মতে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে প্রকৃতির খেয়ালে এমন হচ্ছে দাবী করে তিনি আরো বলেন- প্রকৃতির এ আচরণের উপকূলীয় দ্বীপাঞ্চলের মানুষ আতংকিত হয়ে পড়েছে। এদিকে টেকনাফ উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ মোজাহিদ উদ্দীনের নির্দেশে টেকনাফ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার (পিআইও) মোঃ জহিরুল ইসলাম গতকাল ২৮ মে দুপুরে সরেজমিন শাহপরীরদ্বীপ ও সাবরাং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বিকালে টেকনাফ ফিরে হাজার হাজার মানুষের পানিবন্দী এবং ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির বর্ণনা দেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছেÑ শুধু শাহপরীরদ্বীপ ও সাবরাং নয়, টেকনাফ পৌর এলাকা, হ্নীলা ও হোয়াইক্যং ইউনিয়নে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ডুবে গিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২৮ মে সন্ধ্যায় এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত প্রবল বর্ষণ ও দমকা বাতাস অব্যাহত থাকায় জলোচ্ছ্বাস, প্লাবিত, পানিবন্দীসহ সেন্টমার্টিনদ্বীপের পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন