জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রীর নিকট অভিযোগ
পেকুয়া প্রতিনিধি
কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় অতি দরিদ্রের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচী প্রকল্পের শ্রমিকদের কাজ চলাকালীন ব্যবহারের উপকরণ ক্রয়ের জন্য বরাদ্দকৃত প্রায় ২৫লাখ টাকার ও বেশি সরকারী অর্থ এ উপজেলায় প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা পিআইওর সাথে যোগসাজস করে
আতœসাৎ করার ঘটনাটি টক অব দ্য পেকুয়ায় পরিণত হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে কক্সবাজারের স্থানীয় পত্রিকাসমূহে এ নিয়ে সচিত্র বস্তুনিষ্ট প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে প্রশাসনের উচ্চ পর্যাসহ পেকুয়ার সর্বত্রে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে সরকারী বিপুল পরিমাণ অর্থ লুটপাটের বিষয়টি তদন্তসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গতকাল বুধবার পেকুয়া উপকূলীয় প্রেস ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রী, ত্রাণমন্ত্রী, ত্রাণ মন্ত্রাণালয়ে সচিব, দূর্নীতি দমন কমিশন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। প্রধানমন্ত্রীসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে দায়ের করা অভিযোগ সাংবাদিক গিয়াস উদ্দিন উল্লেখ করেছেন, ২০১২-১৩ অর্থ বৎসরে সরকারের ত্রাণ ও পূর্নবাসন মন্ত্রাণালয়ের অতি দরিদ্রের জন্য ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচীর ১ম পর্যায়ের কাজ পেকুয়া উপজেলার ৭ ইউনিয়নের গেল বছরের ডিসেম্বরে সমাপ্ত হয়েছে। ১ম পর্যায়ে পেকুয়ার সাত ইউনিয়নে ৩০ প্রকল্পের অধীনে ১হাজার ৭শত ৮৩ জন শ্রমিক নিয়োগ করে তাদের মজুরীর জন্য ১কোটি ২৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। আর ১ম পর্যায়ে পেকুয়ার সাত ইউনিয়নে মোট বরাদ্দের দশ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয় কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে কাজ চলাকালীন নিয়োজিত শ্রমিকদের ব্যবহারের জন্য নানা উপকরণ ক্রয়ের জন্য। সে হিসেবে ১ম পর্যায়ে শ্রমিকদের উপকরণ বাবদ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল ১২লাখ ৪৮হাজার একশত টাকা। ৪০ দিনের কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে শ্রমিকেরা ১ম ও ২য় পর্যায়ে দৈনিক ১৭৫ টাকা মজুরীর ভিত্তিতে কাজ করেছেন। তাদেরকে উপকরণ ক্রয়ের জন্য প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা কোন ধরণের অর্থ দেয়নি। সরকারীভাবে কর্মসংস্থান কর্মসূচীতে উপকরণ ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ থাকলেও সেটি শ্রমিকদের জানানো হয়নি বা তাদের উপকরণ ও ক্রয় করে না দিয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট পেকুয়ার পিআইও অফিসের কর্মকর্তা ও পেকুয়ার ৭ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানরা নয় ছয় করে সরকারী অর্থ লোপাট করেছেন।
এদিকে ওই সাংবাদিক বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করলে পেকুয়ার পিআইওর বিরুদ্ধে আরো বহু অনিয়ম দূর্নীতির প্রমাণ বেরিয়ে আসবে বলে দাবী করেছেন। খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, ৪০দিনের কর্মসূচীর ২য় পর্যায়ের কাজ পেকুয়ার সাত ইউনিয়নের চলতি ২০১৩ ইংরেজীর ১জুন সমাপ্ত হয়েছে। এ পর্যায়ে সাত ইউনিয়নে ৩১টি প্রকল্পের অধীনে ১হাজার ৮‘শ ২৮জন শ্রমিকদের দৈনিক কাজের মজুরীর জন্য ১কোটি ২৭লাখ ৯৬হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। শ্রমিকদের উপকরণ ক্রয়ের জন্য মূল বরাদ্দ থেকে ১২লাখ ৭৯ হাজার ৬‘শ টাকা বরাদ্দ ছিল। পেকুয়ার সাত ইউনিয়রে ৪০ দিনের কর্মসৃজন কর্মসূচীতে ১ম ও ২য় পর্যায়ে উপকরণ ক্রয়ের জন্য ২৫ লাখ টাকার ও বেশি বরাদ্দ থাকলেও প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যরা পেকুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে গোপনে আঁতাত করে উপকরণ ক্রয়ের পুরো বরাদ্দই নিজেরা ভাগ-বাটোয়ারা করেছেন।