চকরিয়ায় সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার কাজে অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ

এম. রায়হান চৌধুরী 
চকরিয়ায় সড়ক নির্মাণ ও সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। দায়সারা গোচের নির্মাণ কাজের কারনে এসব সড়ক চলতি বর্ষা মৌসুমে ফের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
সড়ক বিভাগের এসব সংস্কার কাজে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মতামত না নেয়ার কারনে সওজের কর্মকর্তারা ঠিকাদারদের সাথে বুঝাপড়ার মাধ্যমে অনিয়মকে নিয়মে পরিনত করে চলছে। এতে অনেকটা বিনা বাঁধায় তারা কাজের গুনগত মান যাচাই না করে জুন ফাইনালের অজুহাতে সহজে কাজ শেষ বিল উত্তোলনে নেমে পড়েছে। এতে সরকার সড়ক উন্নয়নে এখানে বিপুল পরিমাণ অর্থ বরাদ্ধ দিলেও দায়িত্বহীন দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের লোভ লালসার কারনে লোপাট হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। তবে প্রচার রয়েছে লোপাটের ওই টাকা সওজের কর্মকর্তা ও ঠিকাদাররা ভাগ-বাটোয়ারা করে নিচ্ছে। স্থানীয় এলাকাবাসি জানিয়েছেন, সড়ক সংস্কার ও নির্মাণ কাজে অনিয়মের ব্যাপারে তারা অভিযোগ দিলেও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা রয়েছে কুম্ভকর্ণের ভুমিকায়।
       কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগ সুত্র জানায়, চকরিয়া-পেকুয়া-বাঁশখালী সড়কের কয়েকটি জায়গায় সংস্কার ও সড়ক নির্মাণ কাজ চলছে। এ সড়কের চকরিয়া উপজেলার বি.এম.চর, কোনাখালী ও পেকুয়া অংশে বাঘগুজারায় ২৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৭শত মিটার সড়কের সংস্কার কাজ চলছে। একই সড়কের টৈটং এলাকায় ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩ শত মিটার সড়কের নির্মাণ কাজ চলছে। ককক্সবাজার সওজ সত্রে জানা যায়; এসব সড়কের নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে প্রায় ৮০ভাগ শেষ হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে সড়ক সংস্কার কাজের ক্ষেত্রে দায়সারা গোচের কাজ করা হচ্ছে। নিন্মমানে বিটুমিন ও শীলকোট দিয়ে পাতলা একটি প্রলেপ দিয়ে সংস্কার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। যা চলতি বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে মুছে শেষ হয়ে যাবে। ফলে আবারও এ সড়কটি গাড়ী চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়বে। ঠিক একই ভাবে টৈটং অংশে এ সড়কটির নির্মাণ কাজে ব্যাপক দূর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কাজ চলছে। এলাকাবাসি জানান; এর আগেও সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল। ওই সময় এক বছরের মধ্যে সড়কটি গাড়ী চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়ে। এবারের কাজটি আরও দূর্বল। 
    কক্সবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সড়ক সংস্কার ও নির্মাণ কাজ গুনগত মানের করার লক্ষ্যে মাঠ পর্যায়ে সওজের কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করছেন। তবে কাজের অনিয়মের ব্যাপারে অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারী প্রতিষ্টানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
      এলাকাবাসি জানায়, গত বছরের স্বরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ চিরিঙ্গা জনতা বাজার- বাঘগুজারা সড়ক সংস্কার কাজটিতে ব্যাপক অনিয়মের আশ্রয় নেয়া হয়েছে। এ সড়কের চকরিয়ার জালিয়া পাড়াস্থ পাবলিক স্কুলের সামনে ছোট একটি ভাঙ্গা মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১৬লাখ টাকা। এলাকাবাসির মতে ওই ভাঙ্গা মেরামতে ৮লাখ টাকাও ব্যয় করা হয়নি। এ সড়কে ২৮ লাখ টাকার ব্রীক সলিনেরও কাজ রয়েছে। ওই ব্রীক সলিনের কাজটি কোথাও চোখে পড়ার মতো নয়। সড়কের খানাখন্দক গুলোও ভরাট করা হয়নি। অথচ ঠিকাদারেরা বিল উত্তোলন করে নিয়ে গেছে। এলাকাবাসি জানায়, এ বর্ষায় এই সড়কটি দিয়ে গাড়ী চলাচলতো দূরের কথা পায়ে হেটে চলা দায় হবে। এদিকে ডুলাহাজারায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সামনের সড়কটির ৩৭লাখ টাকার নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়ম  ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চিরিঙ্গার এক ঠিকাদার সড়ক বিভাগের এসব কাজ করছেন নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস আদেশের বদলে নিজের ইচ্ছে মতো।  সাফারি পার্কের ওই কাজের বেশীরভাগ বিল ইতোমধ্যে উত্তোলন করে নেয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন চিরিঙ্গা সড়ক বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন