টেকনাফ ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ভেঙ্গে পড়েছে

মোঃ আশেক উল্লাহ ফারুকী: দেশের সর্বদক্ষিণ সীমান্ত টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপতালের চিকিৎসা সেবা একেবারে ভেঙ্গে পড়েছে। একজন নাগরিকের মৌলিক অধিকারের মধ্যে চিকিৎসা একটি অন্যতম মৌলিক অধিকার। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে যে সব সমস্যা বিরাজ করছে, তার মধ্যে জনবল সমস্যা প্রকট। ৫০ শর্য্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে ২০ জন ডাক্তার থাকা কথা, যেখানে রয়েছে মাত্র ৬ জন ডাক্তার। তার মধ্যে সপ্তাহে ছুটিতে থাকে ৩/৪ জন।
সরকার ইউনিয়ন  পর্যায়ে সে সব ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছে তারা কিন্তু নিয়োগ শর্ত মানছেননা। ডাক্তারেরা শহরমূখী এবং প্রাইভেট ক্লিনিক চিকিৎসা বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া ডাক্তারের পাশাপাশি নার্স বা সেবিকা সমস্যা অন্যতম। ডাক্তার এবং নার্স বা সেবিকার পদ শুন্যতার ফলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা রোগীরা পর্য্যাপ্ত পরিমান চিকিৎসা পাচ্ছেন না। টেকনাফ উপজেলায় আড়াই লাখ মানুষের জন্য মাত্র একটি সরকারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল এবং ৩০ শয্যা থেকে এ সরকারের আমলে ২০ শয্যা বৃদ্ধি করে ৫০ শয্যায় উপনীত হয়েছে। দেশের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন সেন্টমার্টিনদ্বীপে ১০শয্যা বিশিষ্ট অত্যাধুনিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ করে দ্বীপের জনগণ ও পর্যটকদের স্বার্থে কোন উপকারে আসছেনা। এখানে ডাক্তার নিয়োগ দেয়া হলে ও তারা থাকেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে। ওখানে কয়েকজন কর্মচারী দিয়েই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চলছে। নিয়োগ দেয়া ডাক্তার কাগজে কলমে থাকলে ও বাস্তবে কর্মস্থলে পাওয়া যায়না। সেন্টমার্টিনদ্বীপের প্রায় ৮ হাজার জনগণ চিকিৎসা সেবা থেকে তারা সম্পূর্ণরূপ বঞ্চিত। চিকিৎসা না পেয়ে রোগীরা উপজেলা কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেম হাসপাতালে চলে আসে এবং অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি চিকিৎসায় ব্যবহত না হয়ে নষ্ঠ হচ্ছে। ডাক্তারের উপর অর্পিত দায়িত্বের প্রতি অবহেলা, ওষুধ কোম্পানির দৌরাতœা, ডাক্তারদের মধ্যে     অভ্যন্তরিন কোন্দল। রোগীর এবং জনগণ চিকিৎসা সেবা থেকে তারা সম্পূর্ণরুপে বঞ্চিত। এছাড়া ডাক্তারেরা তাদের আবাশিক ভবনে চিকিৎসা বাণিজ্য নিয়ে মশগুল থাকেন। প্রাইভট চিকিৎসার প্রতি ডাক্তারেরা থাকেন প্রতিযোগীতা। ডাক্তাররা আবাশিক ভবনের সামনে কর্মচারী নিয়োগ করে রোগীদের প্রাইভেট চিকিৎসার প্রতিযোগীতা চালিয়ে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে আসছে। টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে সামনে ৪/৫টি ফার্মেসী ও প্যাথলোজি গুলো ডাক্তারের নিয়ন্ত্রন থাকায় রোগীরা স্বাস্থ্য  কমপ্লেক্সে হাসপাতালে চিকিৎসা না নিয়ে ওখানে চিকিৎসা নিচ্ছে। ৫০ শর্য্যার এই হাসপাতালে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে উপ-স্বাস্থ্য ডাক্তারদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। ফলে এসব এলাকার রোগীদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। হাসপাতালের পরিবেশ অপরিছন্ন থাকায় হাসপাতালের ভিতরে বাথরুমে যাওয়ার পরিবেশ নেই এবং রোগীদের খাবার তালিকা অনুযায়ী খাবার না দেয়া এবং রোগীরা বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসে। হাসপাতালে কর্মরত মালা নামক এক আয়া তার বাসায় বানিজ্যিকভাবে এম,আর বা গর্ভপাত করায় তার বিরুদ্ধে সুনিদ্রিষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তার ভূল চিকিৎসায় এভাবে প্রায় অনাথ শিশু মারা গেছে বলে এমনও অভিযোগ রয়েছে। কোন কোন সময় তার বাসার সামনে একাদিক সি,এনজি দেখা যায়। ড্রাইবারদের কাছে জানতে চাইলে বলেন, গর্ভপাত করার জন্য এসেছেন। ৬/৭ মাসের গর্ভপাত করিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এভাবে আয়া মালা কাটি কাটি টাকা কামিয়ে দেশে দ্বিতল বিশিষ্ট ভবণ নিমার্ণ করছে। অবৈধ জারজ শিশু গর্ভপাত করার একমাত্র ঠিকানা মালা নামে পরিচিত। অথচঃ এম,আর বা গর্ভপাত করার যার কোন প্রশিক্ষণ নেই, তিনি কিভাবে এ ঝুকিঁপূণ একাজ করেন, তাহা নিয়ে সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। হাসপাতালে পঃ পঃ কল্যান দপ্তরে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত পরিদর্শিকা থাকার পর ও কেন ? মালা একা একাজ করেন, এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না তাহা নিয়ে সচেতল এমলের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে। গণহারে অবৈধ ৬/৭ মাসে শিশু গর্ভপাত করিয়ে সে অর্থাৎ মালা অবৈধ কাজের প্রতি উৎসাহ দিয়ে আসছে। আয়া মালা এ হাসপাতালে কর্মরত আছেন এক যুগের কাছাকাছি। এখানকার সব শ্রেণীর পেশাজীবি লোকের সাথে রয়েছে তার পরিচিত। সুতারাং জনস্বার্থে এখান থেকে তার বদলী প্রয়োজন। হাসপাতালের বদনাম বা সমস্যা এখানে শেষ নয়। স্থানীয় সংবাদকর্মীরা হাসপাতালে পরিদর্শন করতে গেলে রোগী ও কর্মচারীর অনিয়ম দুর্নীতি, স্বজনপ্রাতি এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের তথ্য উপাত্য গোমর ফাঁস করে দিচ্ছে। যাহার কোন অভিযোগপত্র না থাকলে ও এসব অভিযোগ কিন্তু জনশ্র“তি রয়েছে। অপর এক সূত্রে জানা যায়, টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেকস হাসপাতালের রোগী বহনকারী এম্বোলেন্স ডাইবার এর সাথে ইয়াবা ব্যবসায়ীদের মধুর সম্পক রয়েছে। এমন অভিযোগ অনেকের। কক্সবাজার রেপারকৃত জরুরী রোগীর আড়ালে ইয়াবার চালান চলে যাচ্ছে। এসব অথ্য সবার মূখে মূখে। সর্বশেষ জরুরী বিভাগে জরুরী রোগীরা তাৎকনিকভাবে কর্মচারী ছাড়া ডাক্তার পাওয়াা যায়না। প্রয়োজনে নার্স কর্তৃক ডাক্তারকে খুজে নিয়ে আসতে হয় জরুরী বিভাগে। অনেক সময় চিকিৎসা না পেয়ে ডাক্তার আসার আগে রোগী মারা যায়, এমন অভিযোগ অতীতে ও রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন