শিল্প এলাকা ইসলামপুরে নীরব চাঁদাবাজী

ঈদগাঁও প্রতিনিধি

কক্সবাজার সদরের ইসলামপুর শিল্প এলাকায় প্রতিবছর কোটি কোটি টাকার চাঁদা আদায় করে নিচ্ছে এলাকার চিহিৃত চাঁদাবাজ চক্র। স্থানীয় প্রশাসনের নাকের ডগায় দীর্ঘদিন ধরে এই চাঁদাবাজী চলে আসছে বলে জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা। ইসলামপুর শিল্প এলাকায় ৪০/৪৫টি উৎপাদনশীল লবণ কারখানায় লোড-আনলোড, উৎপাদন, লবণ আয়োডিনযুক্তকরণ সহ প্রতিটি ক্ষেত্রে
শ্রমিকদের অঘোষিত নিয়ন্ত্রক বনে গেছে চাঁদাবাজদের এ সিন্ডিকেট। ইসলামপুরের কারখানাসমূহে কর্মরত অর্ধশত শ্রমিক সর্দারের অধীনে ১০ সহস্রাধিক শ্রমিককে নিয়ন্ত্রন করে আসছে চাঁদাবাজদের এ সিন্ডিকেট। কোন মিল মালিক এদের কথার বাইরে গেলেই শ্রমিকদেরকে চাপ প্রয়োগ করে উৎপাদনসহ সংশ্লিষ্ট কারখানার যাবতীয় কর্মকান্ড বন্ধ করে দেয়া হয়। ইসলামপুরে স্থাপিত ৪০/৪৫টি লবণ কারখানায় উৎপাদন অব্যাহত রাখতে লক্ষ লক্ষ টন অপরিশোধিত লবণের প্রয়োজন হয়। এ লবণ সরবরাহ  দিতে প্রতিদিন শত শত লবণবাহী কার্গো বোট বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকা থেকে লবণ বোঝাই করে ইসলামপুর খালে আসে। লবণ ভর্তি এসব প্রত্যেক কার্গোবোট থেকে ২/৩শ টাকা হারে বাধ্যতামূলক চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। স্থানীয় একাধিক সাইনবোর্ড সর্বস্ব ভূঁয়া প্রতিষ্ঠানের টোকেন দিয়ে এ চাঁদা আদায় করা হয়। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে বোট শ্রমিকদেরকে মারধর করে রশি, নোঙ্গর, গিয়ারবক্স ও মেশিনের যন্ত্রপাতি খুলে নিয়ে যায় রাতের আঁধারে। এসব ঝামেলার ভয়ে ২/৩শ টাকা চাঁদা দিতে বাধ্য হচ্ছে ট্রলার শ্রমিকরা। ইসলামপুরের ৪০/৪৫টি লবণ মিলের জেটি ও খালে নোঙ্গর করা লবণবাহী বোট থেকে চাঁদা আদায়ের জন্য রয়েছে ১০/১৫ জনের বাহিনী। এরা সবাই এলাকার চিহিৃত অপরাধী ও বিভিন্ন মামলার জেল ফেরত আসামী। ইসলামপুর শিল্প এলাকার কয়েকজন লেবার সর্দার (মাঝি)র মদদে শ্রমিকদেরকে নিয়ন্ত্রণ করে রকমারি অপকর্ম করে আসছে এ চাঁদাবাজ গ্রপ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কার্গো বোট মালিক জানান, প্রতি ট্রিপে বাধ্যতামূলক ভাবে দুতিনশ টাকা চাঁদা দিতে হয়। অন্যথায় বিভিন্ন রকম নির্যাতন করা হয় বোটের মাঝিমাল্লাদের। এ নিরব চাঁদাবাজী চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে। উক্ত চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে পুলিশী অভিযানের দাবী জানিয়েছেন ইসলাপুর শিল্প এলাকার ভূক্তভোগী মিল ও ট্রলার মালিকসহ সর্বস্তরের জনসাধারণ।