কক্সবাজারে সন্ত্রাসী মেডিকেল অফিসারের অপসারণ ও শাস্তির দাবিতে আল্টিমেটাম

আহত সাংবাদিক নিরাপত্তাহীনতায়: থানায় মামলা হয়নি এখনো

কফিল উদ্দিন আনু: কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার সেই বহুল আলোচিত-সমালোচিত ডাঃ আব্দুস ছালামের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দিয়েছেন সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিক এম. আমান উল্লাহ। ঘটনার পরপরই শুক্রবার রাতে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন আহত ওই সাংবাদিক। কিন্তু শনিবার দুপুর পর্যন্ত সদর থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড না করলেও জানা গেছে, সন্ত্রাসীমূলক কর্মকান্ডের মামলা থেকে বাঁচতে ডাঃ আব্দুস ছালাম ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। ফলে আহত সাংবাদিক আমান উল্লাহ এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। তিনি বলেন, ডাঃ আব্দুস ছালাম জেলা পুলিশ হাসপাতালের ভিজিটিং মেডিকেল অফিসার ও গেজেটেড সরকারী কর্মকর্তা হওয়ায় আন্তরিকতা থাকা সত্বেও সদর মডেল থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করতে বিব্রতবোধ করছেন।

অভিযোগ উঠেছে, সরকারী দায়িত্বের অতিরিক্ত হিসেবে তিনি পুলিশ হাসপাতালের ভিজিটিং মেডিকেল অফিসার হওয়ায় ক্ষমতার অপ-ব্যবহার করে তিনি সাংবাদিক আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে থানায় উল্টো একটি চাঁদাবাজির অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন। তবে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মিথ্যা মামলা দেওয়ায় পুলিশ ডাঃ আব্দুস ছালামের ওই মিথ্যা মামলাটিও রেকর্ড করেনি। এ অবস্থায় একজন সরকারী কর্মকর্তা কর্তৃক প্রকাশ্যে সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় ফুঁসে উঠেছে কক্সবাজারের সাংবাদিক সমাজ। তারা অবিলম্বে সাংবাদিক আমান উল্লাহর উপর হামলাকারীদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা নিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন। এজন্য কক্সবাজারে কর্মরত সাংবাদিকরা জেলা পুলিশ সুপার সহ সংশ্লিষ্ট উচ্চ পর্যায়ে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। একই সাথে সুশীল সমাজ ডাঃ ছালামের সকল অপকর্মের তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপও কামনা করেছেন। তারা বলেন, কক্সবাজার জেলার স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে নিজ জেলায় সরকারী দায়িত্ব পাওয়ার সুবাদে খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে ডাঃ ছালাম হয়ে উঠেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের গলার কাটা। তাছাড়া এ রকম একজন বিতর্কিত ব্যক্তিকে জেলা পুলিশ হাসপাতালের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়াটাও ভুল সিদ্ধান্ত। কারণ স্বাস্থ্য ও পুলিশ বিভাগের ভাবমুর্তি ক্ষুণœ করতে এরকম একজন দুষ্ঠ চরিত্রের লোকই যথেষ্ট। সরকারী বনায়ন উজাড়, মানুষের ভিটাবাড়ি দখল, মিথ্যা মামলাবাজি সহ এমন কোন অপকর্ম নেই যেখানে এই বিতর্কিত ডাঃ ছালাম জড়িয়ে পড়েননি।
সূত্র জানায়, কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বত্তাতলি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা রশিদ আহমদের ছেলে আব্দুস ছালামের জন্ম সেখানকার একটি নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে। কিন্তু সরকারী চিকিৎস হওয়ার পর তিনি কক্সবাজার কারাগার, পুলিশ হাসপাতাল, ভ্রাম্যমান আদালতে সিভিল সার্জনের প্রসিকিউটর হওয়া সহ নানা কারণে দুর্নীতির আশ্রয়ে তিনি এখন স্বনামে-বেনামে কক্সবাজারে অনেক সহায় সম্পত্তির মালিক। সূত্র মতে, নিজের সহায় সম্পত্তি বৃদ্ধি করার জন্য উক্ত বিতর্কিত আব্দুস ছালাম পাহাড়, পবর্ত, নালা-নর্দমা, সরকারী বনায়ন, অসহায় ব্যক্তিদের ভিটা-বাড়ি দখল সহ হরেক কুকৃর্তি করে পার পেয়ে যাচ্ছেন। নিজের কুকর্মের জন্য তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একের পর এক অভিযোগ ও মামলা মোকদ্দমা করেও ভুক্তভোগীরা প্রতিকার না পাওয়ায় তার অপকর্মের মাত্রা দিন দিন আরো বেড়ে যাচ্ছে।
কক্সবাজারের কর্মরত সাংবাদিক সহ জেলার অধিকাংশ সুশীল সমাজ তার নানা অনিয়ম, দুর্নীতির কথা এই প্রতিবেদককে জানিয়ে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তার অপসারণ ও শাস্তির আল্টিমেটাম দিয়ে আরো বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগ তার অপসারণ না করলে স্থানীয় সাংবাদিক ও সুশীল সমাজ বসে থাকবেনা। তারা প্রয়োজনে সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও, অবস্থান ধর্মঘট, প্রয়োজনে কক্সবাজারে লাগাতার হরতাল দেবেন বলেও জানিয়েছেন।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন