পুলিশের মধ্যে অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে

ডেস্ক রিপোর্ট : পুলিশের অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই। তাদের অপরাধ গোটা বাহিনীকে কলঙ্কিত করছে। কতিপয় পুলিশ সদস্যের অপরাধ প্রবণতার সাথে জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা পুলিশ প্রশাসনকে বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলছে। সরকারের শেষ সময়ে এসে এ প্রবণতার হার শনৈঃ শনৈঃ বাড়ছে। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সরকার তার রাজনৈতিক ইচ্ছা
পূরণে পুলিশকে যথেচ্ছ ব্যবহারের ফলে পুলিশের মধ্যকার কতিপয় সদস্যের মাঝে অপরাধপ্রবণতার হার বাড়ছে। তারা বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে। পুলিশ সদর দফতরের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, প্রতি বছর প্রায় ১৩ হাজার পুলিশ সদস্য বিভিন্ন অপরাধের দায়ে দ-িত হচ্ছে। যাদের মধ্যে পুলিশ সুপার (এসপি) থেকে সাধারণ কনস্টেবল পর্যন্ত রয়েছে। তবে শাস্তির ক্ষেত্রে কেবল কনস্টেবলদের বলির পাঠা করে পার পেয়ে যান অপরাধে জড়িত কর্তাব্যক্তিরা। পদস্থ দোষী পুলিশ সদস্যরা রাজনৈতিক ও আর্থিক শক্তি প্রয়োগ করে পার পেয়ে যাচ্ছে।

সাম্প্রতিক একটি দৃষ্টান্ত : আইন-শৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনী পুলিশের অপরাধবৃত্তেই বন্দী থেকে যাচ্ছে। এমনকি সহকর্মী মহিলা পুলিশ সদস্য কিছু পুরুষ পুলিশ সদস্যের লালসার হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। পদস্থ কর্মকর্তারা নিপীড়ন চালাচ্ছেন অধঃস্তন নারী পুলিশ সদস্যদের।

সম্প্রতি ঢাকা জেলার পুলিশের রিজার্ভ অফিসার (আরও) আবুল কাশেমের ক্ষেত্রেও এমনই একটা ঘটনা ঘটেছে। জেলার পুলিশ সদস্যদের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তার। অথচ এই সুযোগের অপব্যবহার করেই আবুল কাশেম সহকর্মী তিন নারী পুলিশের ওপর যৌন নিপীড়ন চালিয়েছেন। এ নিয়ে নারী পুলিশের মধ্যে ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

সূত্রমতে, ঢাকা জেলার রিজার্ভ পুলিশ অফিসার আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে অভিযোগÑ এক নারী পুলিশ অফিসিয়াল কাজে তার কাছে গেলে সে কাজ করে দেয়ার কথা বলে কুপ্রস্তাব দেয়। এতে ওই নারী পুলিশ তার ওপর ক্ষিপ্ত হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে বাকবিত-ার ঘটনা ঘটে। পরে বিষয়টি গড়ায় ঢাকা জেলার ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের কছে। এ অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আরও দুই নারী পুলিশ অনৈতিক কাজের অভিযোগ আনে। এ ঘটনার পর পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি মিজানুর রহমানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন সম্পর্কে মিজানুর রহমান বলেন, তিন নারী পুলিশের অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা জেলার রিজার্ভ অফিসার আবুল কাশেমের বিরুদ্ধে তদন্ত করা হয়। তদন্ত প্রতিবেদন ইতোমধ্যে ডিআইজি ঢাকা বরাবর পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা জানিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, আবুল কাশেমকে প্রাথমিক শাস্তি হিসেবে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বদলি করা হয়েছে।

বেশ কয়েকজন নারী পুলিশ সদস্যের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, আবুল কাশেমের মতো এমন অনেক পুলিশ কর্মকর্তাই রয়েছেন যারা রক্ষক হয়ে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ। এর ফলে আতঙ্কে রয়েছেন তারা। আর নারী পুলিশ সদস্যরা স্বাভাবিক কাজকর্মে বিঘœ সৃষ্টির পাশাপাশি সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

শুধু আবুল কাশেমই নন, প্রতিনিয়ত হাজার হাজার পুলিশ সদস্য নানা ধরনের অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। পুলিশ সদর দফতর সূত্রে জানা গেছে, পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দফতরে লক্ষাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে পদস্থ কর্মকর্তাদের ভয়ঙ্কর অপরাধের ঘটনা ধামাচাপা থেকে যায়। অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশ, তার বিরুদ্ধে সাক্ষী পুলিশ সদস্য এবং তদন্তকারী কর্মকর্তাও পুলিশ সদস্য। ফলে অধিকাংশ  ঘটনা আড়াল থেকে যায়। আবার বাদীপক্ষকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা উঠিয়ে নিতে বাধ্য করা হয়।

পুলিশ সদর দফতরের সিকিউরিটি সেল সূত্রে জানা যায়, গত এক বছরে পুলিশের অপরাধ প্রবণতা অন্তত কয়েক গুণ বেড়েছ্ে ২০১১ সাল থেকে ২০১২ পর্যন্ত সারা দেশে বিভিন্ন অপরাধে শাস্তি হয়েছে ১৩ হাজার ৭৪৫ জন পুলিশ সদস্যর। এর আগের বছর ২০১০ সালে সারা দেশ পর্যায়ে প্রায় ১১ হাজার পুলিশের শাস্তি হয়েছে। এসব শাস্তি ভোগকারী পুলিশ সদস্যদের মধ্যে কনস্টেবল থেকে এসপিরাও রয়েছে। শাস্তির মধ্যে রয়েছেÑ চাকরিচ্যুতি, বরখাস্ত, পদাবনতি, ইনক্রিমেন্ট বাতিলসহ বিভিন্ন বিভাগীয় ব্যবস্থা।

সিকিউরিটি সেলের এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১১ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭শ’ ৪৫ জন পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন দ-ে দ-িত করা হয়। এরমধ্যে কনস্টেবল থেকে এসআই ১৩ হাজার ৭১১ জন, ইন্সপেক্টর ২৩ জন, এসপি ৭ জন, অতিরিক্ত এসপি ১ জন ও এসপি ৩ জন। এর মধ্যে মাত্র ৩ জন ইন্সপেক্টরকে গুরুদ- ও একজনকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে। এসপি, অতিরিক্ত এসপি ও এএসপিদের দেয়া হয় লঘুদ-। অবশ্য কনস্টেবল থেকে এসআইদের লঘুদ- দেয়া হয়েছে ১২ হাজার ৯৭২ জন, গুরুদ- ৬১২ জন, চাকরিচ্যুতি ৯০ জন, বাধ্যতামূলক অবসর ৩০ জন।

তদন্তে বন্দী পুলিশের অপরাধ : ডিবি কার্যালয়ে আটকে মারধর ও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দিয়ে গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর কারওয়ান বাজারের কাইয়ুম নামে এক ব্যবসায়ীর ৮৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ডিবির ডিসি মোল্লা নজরুল ইসলাম। একইভাবে গুলশানের আবিদুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে এক কোটি টাকা হাতিয়ে নেন মোল্লা নজরুল। এই দুই কাজে তাকে সহযোগিতা করেন ডিবির এসআই আজাহার ও সাব ইন্সপেক্টর হাসনাত। এসব ঘটনায় মোল্লা নজরুলকে পুলিশ সদর দফতরে বদলি ও বাকি দু’জনকে বরখাস্ত করা হয়। এবং ডিএমপি কমিশনারের মুখপাত্র মনিরুল ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অভিযোগ রয়েছে গত ৫ বছর ধরে একই কার্যালয়ে একসঙ্গে কাজ করার সুবাদে মনিরুল ইসলামের সঙ্গে মোল্লা নজরুলের সখ্যতা রয়েছে। সেক্ষেত্রে তদন্তের ফলাফল কী হবে তা এখন দেখার বিষয়।

ফরিদপুরের ছেলে ঢাকার কাওরান বাজার এলাকার ব্যবসায়ী কাইয়ুম জানান, ডিবি কার্যালয়ে নির্যাতনের এক পর্যায়ে তিনি মনোবল হারিয়ে ফেলেন। পরে উপায় না পেয়ে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী-যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোহাম্মাদ ফারুক হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং সহযোগিতা চান। ফারুক হোসেনের মধ্যস্থতায় ১ কোটি টাকার বিনিময়ে তাকে ছেড়ে দিতে রাজি হন মোল্লা নজরুল। ওইদিন সকালে ২০ লাখ নগদ টাকা দেয়ার পর যুবলীগ নেতা ফারুক হোসেন বাকি টাকা দেয়ার জামিনদার হলে মুক্তি দেয়া হয় কাইয়ুমকে। ছাড়া পাওয়ার দু’মাসের মধ্যে ধারদেনা করে মোট ৮৬ লাখ টাকা মোল্লা নজরুলের হাতে তুলে দিয়ে রক্ষা পান ব্যবসায়ী কাইয়ুম।

এসব ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি থেকে মুক্তি পেতে মোল্লা নজরুল এখন সুবিধাভোগী প্রভাবশালী লোকদের মাঠে নামিয়েছেন। ওইসব ব্যক্তি ভুক্তভোগীদের বাড়িতে গিয়ে নতুন করে চাপ দিচ্ছেন তদন্ত কমিটির কাছে গিয়ে টাকা নেয়ার কথা অস্বীকার করতে। সম্প্রতি শহীদ চৌধুরী নামে আমেরিকা থেকে একজনকে দেশে আনা হয়েছে মোল্লা নজরুলের বিষয়টি ম্যানেজ করার জন্য। মোল্লা নজরুলকে বাঁচাতে চাঁদাবাজির শিকার লোকদের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন শহীদ চৌধুরী।

এদিকে গত মাসের শেষের দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারে গাড়ি ছিনতাই করার সময় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) নায়েক হেমায়েত উদ্দিন (৪০) এবং গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর থানার কলমেশ্বর এলাকার কদম আলীর ছেলে কবীর হোসেন (৩৮) গ্রেফতার হয়। অভিযুক্ত ওই পুলিশ সদস্যকে ঢাকার ডিবি কার্যালয়ে এনে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ছিনতাইয়ে জড়িত আরো কয়েকজন পুলিশ সদস্যের নাম বলে। কিন্তু আজো ওইসব পুলিশ সদস্যদের গ্রেফতার করা হয়নি। উল্টো ওইসব পুলিশ কর্মকর্তা ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে বহাল তবিয়তে রয়েছে।

সম্প্রতি সাভারের শামীম সরকার নামে এক ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে ৬ পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়। এর মধ্যে এএসআই আকিদুল, এসআই সাজ্জাদসহ চারজনকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে আনা হয়। এ ঘটনায় ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজিকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও আদৌ তা আলোর মুখ দেখবে কি না এ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। কারণ হিসেবে শামীমের আত্মীয়-স্বজনরা জানান, ইতোমধ্যে ওইসব পুলিশ কর্মকর্তাদের শুভাকাক্সক্ষীরা হুমকি-ধমকি দেয়া শুরু করেছেন। নেপথ্যে রয়েছেন এএসআই আকিদুলের এক ধনাঢ্য বন্ধু জাকির হোসেন। তিনি ঘোষণা দিয়ে আকিদুলকে রক্ষা করতে মাঠে নেমেছেন।

অপরদিকে নারায়ণগঞ্জের সোনার এলাকার ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বাড়িতে চার মার্ডারের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত শামীম রেজাকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এএসপি উত্তম বসাক পাঠক, ওসি তদন্ত অরূপ তালুকদারকে পুলিশ সদর দফতরে এবং এসআই পল্টু ঘোষকে নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্ত ওই থানার ওসি আতিকুর রহমান এখনো বহাল তবিয়তে থানায় দায়িত্ব পালন করছেন। এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসরাফুজ্জামান দৌলাকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। পরে ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজিকে প্রধান করে অপর একটি কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু এই কমিটির কাছ থেকে কোনো ফলাফল পাওয়া সম্ভব নয় বলে অভিযুক্ত চার পুলিশ সদস্যের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেফতার চেয়ে চলতি মাসের ১১ তারিখে হাইকোর্টে একটি রিট করেন নিহত শামীমের বাবা হাজী আলাউদ্দিন।

তিনি বলেন, অভিযুক্তদের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটির কাছে মিথ্যা সাক্ষী দেয়ার জন্য হুমকি পাওয়ার পর তিনি এমন সিদ্ধান্ত নেন।

এর আগে রাজধানীতে প্রতারণা করতে গিয়ে কাফরুল থানার তিন পুলিশ গ্রেফতার হয়। সম্প্রতি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আগারগাঁও এলাকা থেকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার আসাদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি দল কাফরুল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোশারফ হোসেন, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) রবিউল আলম ও কনস্টেবল নেয়ামত আলীকে গ্রেফতার করেন। তারা অপর সহযোগীদের নিয়ে একজন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করছিলেন। কিন্তু হাতেনাতে গ্রেফতার করার পরও তাদের কোনো শাস্তি হয়নি। উল্টো তাদের নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে তাদের পক্ষে প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর তাদের পুনরায় কর্মস্থলে যোগদানের অনুমতি দেয়া হয়।

মিরপুরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আব্দুল হালিমকে ছিনতাইয়ের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দিয়ে নির্যাতন এবং গভীর রাতে মোটা অঙ্কের ঘুষ নিয়ে মুক্তি দেয়ার ঘটনায় হয়রানির শিকার ওই ব্যবসায়ী সাব-ইন্সপেক্টর অজিত রায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলেও পরে তিনি আরো একটি মিথ্যা মামলায় অভিযোগকারী আব্দুল হালিমকে ফাঁসিয়ে দেন।

তবে পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ মানতে রাজি নন পুলিশ প্রধান হাছান মাহমুদ খন্দকার। তিনি বলেন, একটি বাহিনীতে ভালোমন্দ লোক থাকতেই পারে। সেক্ষেত্রে অপরাধমূলক কর্মকা-ে অভিযুক্তদের তাৎক্ষণিক প্রত্যাহার করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে এবং দোষ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুতসহ বিভিন্ন সাজা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া যেসব অভিযোগ বর্তমানে তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে দ্রুতই তা শেষ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ভয়ভীতি দেখিয়ে অভিযোগকারীকে প্রবাহিত করার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নতুন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তবে সাবেক কয়েকজন পুলিশ প্রধানদের মতে, তদন্তকাল দীর্ঘায়িত না করে স্বল্প সময়ে তদন্ত শেষ করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে পুলিশের অপরাধ প্রবণতা কমে যেত। এতে অভিযোগকারীকে কোনোভাবে প্রভাবিত করার কোনো সুযোগ থাকত না। একটি বাহিনীর সুনাম ধরে রাখার জন্যই এমনটা করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তারা।

জানা গেছে, পুলিশ অধ্যাদেশ ও সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি মোতাবেক অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের চাকরিচ্যুতি, বরখাস্ত, পদাবনতি, ইনক্রিমেন্ট বাতিলসহ বিভিন্ন বিভাগীয় শাস্তি গ্রহণ করা হয়। তবে গত এক বছরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের অপরাধ অতীতের সব রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। পুলিশ ডাকাতি, ছিনতাই, খুনের ঘটনার সঙ্গে শুধু জড়িয়ে পড়েছে তা নয়, অনেক স্থানে অপরাধ করতে গিয়ে সাধারণ মানুষের হাতে ধরা পড়ে গণপিটুনিরও শিকার হয়েছে। তবে যে সংখ্যক পুলিশ সদস্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা-ের সঙ্গে জড়িত, এদের মধ্যে অনেকেই তদবির করে পার পেয়ে যাচ্ছেন এবং খুব কমসংখ্যকই শাস্তি পেয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন