রামুর বৌদ্ধপল্লিতে সহিংস ঘটনার চার্জশিট চুড়ান্ত : ঈদের পরেই প্রকাশ



নিজস্ব প্রতিবেদক: ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমামনার ছবিকে কেন্দ্র করে ২৯ শে সেপ্টেম্বর রামুর সেই কালো রাত শুধু দেশে নয় বিশ্বের কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। রামুর সহিংস ঘটনাকে কেন্দ্র করে রামুতে মামলা হয়েছে ৮টি, আসামী করা হয়েছে অজ্ঞাতসহ হাজার হাজার জনসাধারণ, প্রায় ৫ শতাধিক মানুষ গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও অনেকে জামিনীমুক্ত হয়েছে। রামু বৌদ্ধপল্লিতে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের তদন্ত রিপোর্টের ২০৫ জন এর তালিকা প্রেরণ করে রামু থানায়।
সে রিপোর্টকে অভিযোগ করে চট্টগ্রাম দায়রা জজ এর নেতৃত্বে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনে ২৯৮ জনের নাম অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঐ তালিকাটি কোর্টে হস্তান্তর করলে অনেকে তালিকাটি সংগ্রহ করে বিভিন্ন মানুষের হাতে চলে গেলে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ২৯৮ জনের তালিকাটি পত্র পত্রিকাসহ ছাপানো হলে হামলাকারীরা আত্মগোপনে চলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছে বলে মনে করেন বড়ুয়া সম্প্রদায়রা। আবার অনেকে মনে করেন, বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনটি মানুষের হাতে আসলে নামগুলো দেখে আলোচনার মধ্যে উঠে আসে প্রকৃত দোষীদের বাদ দিয়ে শক্রুতামূলক নাম দিয়েছে। যাদের নাম এসেছে তাদের মধ্যে একজনের সাথে আলোপ কালে বলেন, ভাই আমাদের নাম গুলি শক্রুতা মূলক দিয়েছেন। আমিওতো আর একজনের নাম বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাছে নাম বলতে পারতাম? যদি আমরা বৌদ্ধপল্লিতে হামলা না করেও আমাদেরকে আসামী করা হয়েছে। কিন্তু আমাদের যদি কিছু হয় তাহলে তাঁদের আমরা ছাড় দেব না। রামু থানার অফিসার ইনর্চাস অপ্পেলা রাজু নাহা জানান, ২৯ শে সেপ্টেম্বর রামুতে বৌদ্ধ সম্প্রদায় এর মন্দির, ঘর, বাড়িতে হামলার বিষয়ে যে মামলা গুলো হয়েছে তদন্ত রির্পোট প্রায় শেষের দিকে। কক্সবাজার জেলা পুলিশ সুপার (এস.পি) মোঃ আজাদ মিয়া জানান, রামু, উখিয়াসহ বৌদ্ধ সম্প্রদায় এর মন্দির, ঘর, বাড়িতে হামলার বিষয়ে ১৯ টি মামলা হয়েছে। তিনি আরও জানান ১৯টি মামলার মধ্যে ১৫ টি মামলার (চার্টশিট) সম্পন্ন হয়েছে, বাকী মামলা ৪টি শেষের দিকে চলছে।
ঈদের পরে রামু, উখিয়াসহ সহিংস ঘটনার হামলাকারীদের যে মামলা গুলো হয়েছে ঐ মামলার (চার্টশিট) দেওয়া হবে। ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমামনার ছবি কেন্দ্র করে ২৯ শে সেপ্টেম্বর সহিংস ঘটনায় যাদের বাড়ী হামলা করা হয়েছে, বিজিবি কর্তৃক নিমিত্ত তালিকায় রয়েছে, নতুন বাড়ী নির্মাণ ১০টি, বাড়ী মেরামত ৮টি, বাড়ী বাউন্ডারী মেরামত ১৫টি, দোকান মেরামত ৪টি, মন্দিরের সহযোগিতা ২টি, রন্ধন সামগ্রী বিতরণ ১৭ পরিবার, রেশন সামগ্রী বিতরণ ৫৭ পরিবার, বস্ত্র সামগ্রী বিতরণ ৪২ পরিবার ও নগদ অর্থ বিতরণ করা হয়েছে।
রামুর ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির গুলো হচ্ছে- সীমা বিহার- মেরংলোয়া, উমংরি বৌদ্ধ বিহার (লাল চিং), মৈত্রী বিহার- চেরেংগাটা, অজান্তা বৌদ্ধ বিহার- চাকমারকুল, আর্যবংশ বৌদ্ধ বিহার- উখিয়ারঘোনা, বিমুক্তি বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্র- উত্তর মিঠাছড়ি, প্রজ্ঞা মিত্র বন বিহার- উত্তর মিঠাছড়ি, উখিয়ারঘোনা জেতবন বৌদ্ধ বিহার- উখিয়ারঘোনা, উ চেন চি রাখাইন বড় বৌদ্ধ বিহার- চেরেংগাটা, উ ক্যজরী রাখাইন বৌদ্ধ বিহার (সাদা চিং)- চেরেংগাটা, অর্পনাচরণ বৌদ্ধ বিহার- চেরেংগাটা, বিবেকারাম বৌদ্ধ বিহার- ফাঁড়িকুল।
উখিয়ার ক্ষতিগ্রস্থ মন্দির গুলো হচ্ছে- দীপংক বৌদ্ধ বিহার- পশ্চিম মরিচ্য, খয়রাতিপাড়া বৌদ্ধ বিহার- খয়রাতিপাড়া, পশ্চিম রত্না শাসনতীর্থ সুদর্শন বিহার- রত্নাপালং, রাজাপালং জাদি বৌদ্ধ বিহার- রাজাপালং, রেজুরকুল সদ্ধর্ম বিকাশ বৌদ্ধ বিহার- রেজুরকুল, উত্তর বড়বিল সার্বজনীন বৌদ্ধ বিহার- উত্তর বড়বিল।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন