কক্সবাজারে যুদ্ধাপরাধী মামলার সম্ভাব্য রায় নিয়ে সতর্কতা জারি

‘এবার সহিংস ঘটনা ঘটলেই চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
আগামী ক’দিনের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের আরো মামলার রায় ঘোষণা হতে যাচ্ছে। সম্ভাব্য এ রায়কে কেন্দ্র করে কক্সবাজার জেলা সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরি সভা গতকাল রবিবার সকালে  জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্টিত হয়েছে। কক্সবাজার জেলা সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ  কমিটির এটি তৃতীয় সভা।
সভায় জেলাব্যাপি আইন শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোঃ রুহুল আমিন এ সভায় সভাপতিত্ব করেন। সভায় জেলা প্রশাসক বলেন-‘আগামী ক’দিনের মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের আরো মামলার রায় ঘোষণার সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে আজকের এ জরুরি সভা ডাকা হয়েছে। আপনারা এ সভা থেকেই সবাইকে সজাগ এবং সতর্ক থাকতে বলবেন। ইতোপুর্বে যুদ্ধাপরাধীদের মামলার রায় ঘোষণার পর জেলাব্যাপি যে সহিংস ঘটনা ঘটেছে এসব আর ঘটতে দেয়া যাবে না। এ ধরনের সহিংসতা মোকাবেলার জন্য এ মুহূর্ত থেকেই আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। কোন মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক নাশকতা সৃষ্টির কাজে জড়িত হলে সেই মাদ্রাসার বিরুদ্ধেও এবার ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

সভায় পুলিশ সুপার মোঃ আজাদ মিয়া জানান-‘ যুদ্ধাপরাধীদের রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে এখন থেকে যে ইউনিয়নে সহিংস ঘটনা ঘটবে বা সড়কের গাছ কেটে ফেলা হবে সেই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের বিরুদ্ধেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। মসজিদের মাইক নিয়ে যাতে মিছিলে বা সহিংস ঘটনায় যোগ দিতে লোকজনদের আহ্বান জানাতে না পারে সেজন্য মসজিদ কমিটির সদস্যদের সজাগ থাকতে হবে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্দিরগুলোর পরিচালনা কমিটির সদস্যদেরও সদা সজাগ থাকতে হবে যাতে কেও সংখ্যালঘুদের হুমকি-ধমকি প্রদান বা হামলা চালাতে না পারে।’ 

সভায় স্থানীয় ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক আবু তাহের ছিদ্দিকী অভিযোগ করে জানান, কক্সবাজার হাশেমিয়া আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সন্ত্রাস ও নাশকতার ঘটনায় লিপ্ত থাকে। এর আগে যেসব সহিংসতা ঘটেছে তার বেশির ভাগই ঘটেছে এই এলাকায়। এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক জানান-‘ মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমি নিজেই তাই এখন থেকে সহিংস ঘটনা প্রতিরোধে সেখানে সিসি ক্যামেরা বসানোর ব্যবস্থা করা হবে।’ কক্সবাজার মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার মোহাম্মদ শাহজাহান সভায় তার বক্তব্যে পুলিশের হাতে জঙ্গী সম্পৃত্ততায় আটক রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) সামরিক শাখার প্রধান হাফেজ সালাউল ইসলামের কারামুক্তিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানিয়েছেন।

যুদ্ধাপরাধী জামায়াত নেতা কাদের মোল্লার মামলার রায়ের পর থেকেই সহিংস ঘটনা এবং হরতাল জনিত সহিংসতাকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন স্থানে এ পর্যন্ত ৬ জন নিহত এবং আহত হয়েছে কমপক্ষে ৩ শতাধিক। এ সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ পর্যন্ত ২৩ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় আসামীর সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। পুলিশ সুত্রে বলা হয়েছে  মামলাগুলোতে এ পর্যন্ত আড়াই শতাধিক ব্যক্তি গ্রেফতার হয়েছেন। তাদেরও অনেকেই জামিনে বেরিয়ে গেছেন।

উল্লেখ্য যে, যুদ্ধাপরাধীদের রায়কে কেন্দ্র করে দেশব্যাপি সহিংস ঘটনার পর গত এপ্রিলে জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে গঠন করা হয় ‘সন্ত্রাস ও নাশকতা প্রতিরোধ কমিটি।’ 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন